‘কত দিন ঈদে পোলাও রান্না করি না, এবার পারুম’

ভৈরব বন্ধুসভার সহর্মিতার ঈদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো

শারীরিক অক্ষমতার কারণে রোকেয়া বেগমের (৫৫) স্বামী একযুগ ধরে কর্মহীন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে চার সদস্যের সংসার চালান তিনি। ঈদ এলেই মনটা ভার হয়ে আসে রোকেয়ার, ঈদের দিন স্বামী–সন্তানের জন্য মন ভরে ভালোমন্দ রান্না করতে না পারার দুঃখে। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন।

রোকেয়া বেগম বলেন, ‘কত দিন ধরে ঈদে পোলাও রান্না করি না। এবার করতে পারুম। এই কথা মনে করতে পাইরা ভালা লাগতাছে।’

রোকেয়া বেগমের মতো ১০০ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রথম আলো ভৈরব বন্ধুসভা। সংগঠনটির ‘সহমর্মিতার ঈদ’ নামের কর্মসূচি থেকে আজ মঙ্গলবার ঈদ উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। বন্ধুসভার বন্ধুদের নিজেদের দেওয়া অর্থ দিয়ে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচির আওতায় ১০০ জনকে দেওয়া হয়েছে খাদ্যসামগ্রী আর ৩০ জনকে দেওয়া হয়েছে অর্থসহায়তা।

খাদ্যসামগ্রীর রয়েছে এক কেজি পোলাওয়ের চাল, এক কেজি ওজনের নুডলস, এক কেজি চিনি, এক প্যাকেট সেমাই, তিন প্যাকেট গুঁড়া দুধ ও এক কেজি পেঁয়াজ।

আজ সকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চণ্ডীবের এলাকায় কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বেশির ভাগ পরিবারে বন্ধুরা নিজ দায়িত্বে খাদ্য পৌঁছে দিয়ে আসেন। কর্মসূচি চলাকালে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক সুমন মোল্লা, ভৈরব বন্ধুসভার উপদেষ্টা আরাফাত ভূইয়া, সভাপতি ইকরাম বখশ, সহসভাপতি নাহিদ হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াংকা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৌরভ, সহমর্মিতার ঈদ কর্মসূচির আহ্বায়ক তাইফ, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদা তমা, সদস্যসচিব নুসরাতুন তোরসা, সদস্য সাইফ প্রমুখ।

নাসিমা বেগম একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয়া। স্বামী মারা গেছেন তিন বছর। তাঁর একার আয়ে সংসার চলে। করোনাকাল শুরু হওয়ার পর থেকে তাঁর জীবনবাস্তবতা আরও কঠিন হয়ে দেখা দেয়। সহমর্মিতার ঈদের খাদ্যসামগ্রী যে কজন পেয়েছেন, তার মধ্যে তিনিও একজন। নাসিমা বলেন, ‘ঈদের আগে এই জিনিসগুলা আমার কাছে স্বর্ণের অলংকারের মতোই।’