করুণায় চলা দিন শেষ হলো তাঁদের

ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত ছয়জনের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। দোকান করে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের প্রত্যেককে দোকান পরিচালনার জন্য ৫০ হাজার টাকার মালামাল কিনে দেওয়া হয়েছে।

উদ্বোধনের পর দোকান পরিদর্শন করেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। শুক্রবার সকালে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায়।প্রথম আলো

দু-এক বেলার খাবারের জন্য কখনো রাস্তায় আবার কখনো মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরতেন তাঁরা। কেউ ফিরিয়ে দিতেন আবার কারও কাছে থেকে পেতেন যৎসামান্য সহায়তা। সে সহায়তাও পেতেন নিজেদের করুণ দশা বর্ণনা করে। ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত এমন ছয়জনের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় পাওয়া দোকান চালিয়ে ওই ছয়জন এবার নিজেরাই আয় করবেন।

দোকান উদ্বোধনের পর মোনাজাতে অংশ নেন অতিথিরা।
প্রথম আলো

শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে ছয়জন ভিক্ষুকের জন্য নির্মাণ করা পুনর্বাসন বিপণিবিতানের উদ্বোধন করেন। সেখানে দোকান পেয়ে সন্তুষ্ট ও খুশি ওই ছয়জন। তাঁরা আর ভিক্ষাবৃত্তিতে ফিরে যাবেন না বলে অঙ্গীকার করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে শেড নির্মাণ করে ছয়জন ভিক্ষুকের জন্য কাঁচামাল, মাছ ও ফলের দোকান করে দেওয়া হয়েছে।

সুবিধাভোগী ছয়জন হলেন উপজেলার সদর ইউনিয়নের রমজান মিয়ার স্ত্রী মমতাজ বেগম, চরচারতলা ইউনিয়নের মৃত রবিউল্লাহর ছেলে শফিকুল ইসলাম, বারিক মিয়ার ছেলে আবদুল কাদির, চান মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগম, পুরাগুদাম এলাকার আশ্রাব আলীর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ও যাত্রাপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম।

তাঁরা জানান, ভিক্ষাবৃত্তির সময় কখনো অসুস্থ হলে বাইরে বের হতে পারতেন না। এ জন্য অনাহারে থাকতে হতো। যেখানে টিকে থাকাই দায়, সেখানে স্বাস্থ্য ও কাপড়ের চিন্তা ছিল তাঁদের কাছে সুদূর কল্পনা।

তাঁরা যেন সুন্দরভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে লাভবান হতে পারেন, এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হবে।
নাজিমুল হায়দার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আশুগঞ্জ

শুক্রবার সকালে ওই পুনর্বাসন মার্কেটের উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জেহাদ উদ্দিন, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিমুল হায়দার, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিমা সুলতানা, আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক প্রমুখ।

আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিমুল হায়দার জানান, ভিক্ষুকদের জন্য শেড নির্মাণ ছাড়াও প্রত্যেককে দোকান পরিচালনার জন্য ৫০ হাজার টাকার মালামাল কিনে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যেন সুন্দরভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে লাভবান হতে পারেন, এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হবে।