করোনা ওয়ার্ডের সংকট নিরসনে জরুরি সভা

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে সংকট নিরসনে জরুরি সভা হয়। হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষ, ১৮ এপ্রিল
ছবি: প্রথম আলো

বরিশাল বিভাগের করোনা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। প্রতিদিনই সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বাড়ছে। অবস্থা এতটাই ভয়াবহ, বিভাগের একমাত্র ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৫০ শয্যার করোনা ওয়ার্ডে এখন শয্যাসংকট দেখা দিয়েছে।

নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ১২টি শয্যা থাকলেও সবগুলোই এখন পূর্ণ। এ কারণে অনেক রোগী আইসিইউ সেবা পাচ্ছেন না। একই সঙ্গে চিকিৎসক–কর্মচারীসংকটে উদ্বেগ বাড়ছে স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।

এসব সমস্যা সমাধানের জন্য আজ রোববার সকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস, জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার ও সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক হাসান।

হাসপাতালের নবনিযুক্ত পরিচালক মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. মনিরুজ্জামান শাহিন এবং সিভিল সার্জন মনোয়ার হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় হাসপাতালের মূল ভবনের এবং করোনা ইউনিটের সমস্যা ও সংকট তুলে ধরেন চিকিৎসকেরা।

সভায় চিকিৎসকেরা জানান, এই হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক, এমএলএসএস ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং আইসিইউ টেকনিশিয়ানের চরম সংকট রয়েছে। করোনা ইউনিটে এখন পর্যন্ত লিফট চালু না হওয়ায় রোগীদের ওঠানামা করতে সমস্যা হচ্ছে। অক্সিজেন সিলিন্ডার ওঠানামা করতে করতে করোনা ইউনিটের নতুন ভবনের সিড়িটি ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।

এক বছর ধরে সিটি করপোরেশন ময়লা অপসারণ না করায় পুরো হাসপাতাল ক্যাম্পাস ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এসব সমস্যার দ্রুত সমাধান করা না হলে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রত্যাশিত চিকিৎসাসেবা পাওয়া সম্ভব নয়।

বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান ১০ দিনের মধ্যে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এসব সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। করোনা ওয়ার্ডে নতুন দুটি এবং পুরোনো ভবনে দুটি লিফট দ্রুত চালু, বর্জ্য অপসারণ এবং আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ করা জনবল দিয়ে আপাতত সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
সভায় বিভাগীয় কমিশনার আরও বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে এই মহামারি প্রতিরোধে একসঙ্গে কাজ করব।’

সভায় বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস বলেন, বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলা হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ শয্যা, বরগুনা হাসপাতালে ১০টি, পিরোজপুরে ৫টি, ঝালকাঠিতে ৫টি এবং ভোলা জেলা হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। জেলা হাসপাতালগুলোতে হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা দিয়ে মুমূর্ষু রোগীদের সেবা অব্যাহত রাখা হচ্ছে। এসব হাসপাতালে নাজাল ক্যানুলা বাড়ানোর প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সভা শেষে হাসপাতালের মূল ভবন এবং করোনা ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।