করোনার সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে বরিশালে আরও ৮ জনের মৃত্যু

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

বরিশালে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চারজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। বাকি চারজন উপসর্গ নিয়ে মারা যান। আজ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এই বিভাগে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩৭ জনের।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে আটজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে চারজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। এই চারজনের তিনজনই ভোলার বাসিন্দা। তাঁদের দুজন ভোলার হাসপাতালে এবং একজন বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে মারা যান। অপরজন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া গ্রামের বাড়িতে মারা যান। এ নিয়ে বিভাগে করোনা পজিটিভ রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২৩২।

অন্যদিকে, উপসর্গ নিয়ে যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা সবাই মারা যান বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের হিসাব নথিভুক্ত করে না।

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২৪ ঘণ্টায় উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া চারজনসহ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে মৃত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৮৩। গত বছরের ১৭ মার্চ শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫০ শয্যার করোনা ওয়ার্ড চালু হয়।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর বলছে, ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে বরিশাল জেলায়, ৭১ জন। এরপর ভোলা জেলায় ৪১ জন, ঝালকাঠিতে ১২ জন, পিরোজপুরে ৫ জন, পটুয়াখালীতে ৫ জন ও বরগুনায় ৩ জন। এ নিয়ে গত বছরের মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে মোট করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১২ হাজার ৮৭৪।

করোনার দ্বিতীয় ধাপে সংক্রমণের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই এ বিভাগে করোনার সংক্রমণ ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে। ১৩ থেকে ১৯ মার্চ—এই সাত দিনে বিভাগের ছয় জেলায় আক্রান্ত হন মাত্র ৭৭ জন। কিন্তু ২০ থেকে ২৬ মার্চ পরের সাত দিনে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল ২২৮। অর্থাৎ প্রায় ৩ গুণ। ১৬ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল—এই ১৯ দিনে বিভাগে আক্রান্ত হন ১ হাজার ৯৯১ জন। আর ৪ থেকে ১৪ এপ্রিল—এই ১০ দিনে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৪১ জনের।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংক্রমণের যে গতি, তা খুবই উদ্বেগজনক। একই সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। এই মুহূর্তে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সাধারণ মানুষের সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু যেভাবে মানুষের উদাসীনতা দেখছি, তাতে আমরা সবাই মিলে সংক্রমণ রোধে যে দিনরাত পরিশ্রম করছি, তা বৃথা হয়ে যেতে পারে।’ তবে আজ থেকে শুরু হওয়া এক সপ্তাহের লকডাউনের পরিপ্রেক্ষিতে সংক্রমণ অনেকটা কমে আসতে পারে বলে তিনি মনে করছেন।