করোনার উপসর্গ থাকা রোগীর চাপ, হাসপাতালের মেঝেতেও জায়গা নেই

যশোরে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। হাসপাতালের বেডে জায়গা না থাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের ঠাঁই হয়েছে মেঝেসহ বারান্দায়। শুক্রবার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মহিলা আইসোলেশন ওয়ার্ডেএহসান-উদ-দৌলা

কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েও যশোরে করোনা পরিস্থিতির লাগাম টানা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই যশোর জেনারেল হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। করোনার উপসর্গ নিয়ে আজ শুক্রবার ২১ জন ভর্তি হয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে এক দিনে এটি সর্বোচ্চ ভর্তির সংখ্যা। হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে কোনো শয্যা খালি নেই। এমনকি মেঝেতেও জায়গা নেই। ফলে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

হাসপাতালের বেডে জায়গা না থাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের ঠাঁই হয়েছে মেঝেসহ বারান্দায়। শুক্রবার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মহিলা আইসোলেশন ওয়ার্ডে
এহসান-উদ-দৌলা

যশোর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে (রেড জোন) ৮০ শয্যার বিপরীতে ৭৬ জন এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডে (ইয়েলো জোন) ১৯ শয্যার বিপরীতে ৪৮ জন ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আরিফ আহমেদ বলেন, করোনার উপসর্গ নিয়ে আজ শুক্রবার ১ দিনেই ২১ জন ভর্তি হয়েছেন, যা আগে ১০-১২ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এ অবস্থা চলতে থাকলে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে। হাসপাতালেও স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ হাসপাতালের অন্যান্য ওয়ার্ডে ৪৫০ রোগী ভর্তি আছেন বলেও জানান তিনি।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে পুরুষের জন্য ১০টি ও নারীদের জন্য ৯টি শয্যা রয়েছে। আজকের ২১ জন নিয়ে সেখানে ভর্তি রয়েছেন ৪৮ জন, যা দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। হাসপাতালের মেঝেতে সারি সারি বিছানা ফেলে রোগী রাখা হয়েছে। রোগীর চাপে এই ওয়ার্ডে দাঁড়ানোর জায়গা পর্যন্ত নেই।

করোনার উপসর্গ নিয়ে কেউ ভর্তি হলে তাঁকে প্রথমে এই ওয়ার্ডে রাখা হয়। পরে পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হলে করোনা ইউনিটে (রেড জোন), আর নেগেটিভ হলে সাধারণ ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

হাসপাতালের বেডে জায়গা না থাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের ঠাঁই হয়েছে মেঝেসহ বারান্দায়। শুক্রবার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ আইসোলেশন ওয়ার্ডে
এহসান-উদ-দৌলা

এদিকে, করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিধিনিষেধের অংশ হিসেবে যশোর শহরের বড় বাজারের ভেতর থেকে মাছবাজার উন্মুক্ত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে লোন অফিস পাড়া সড়কের দুই পাশে মাছবাজার বসতে শুরু করেছে। দুপুরের মধ্যেই মাছবাজারে বেচাবিক্রি শেষ হয়ে যায়। তবে পৌর এলাকার মৎস্য সমবায় সমিতি বড়বাজার যশোরের সভাপতি কৃষ্ণপদ বিশ্বাস বলেন, বড় বাজার মাছবাজারে ১৫০ জন খুচরা মাছ বিক্রেতা আছেন। ঝড়বৃষ্টির মধ্যে রাস্তার পাশে ফাঁকা জায়গায় বাজার বসানো খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে।