করোনার টিকা নিতে নারীদের আগ্রহী করতে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা সড়কে

সাধারণ মানুষকে করোনার টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে মাঠে নেমেছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা
ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায় করোনার টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা পিছিয়ে আছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত এ উপজেলায় মোট টিকা গ্রহণকারীর মাত্র ১৩ দশমিক ২১ শতাংশ নারী। বাকি ৮৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ পুরুষ। পুরুষের বিপরীতে নারীদের টিকা নেওয়ার হার মোটেও সন্তোষজনক নয় বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

সাধারণ মানুষকে করোনার টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে মাঠে নেমেছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বিশেষ করে নারীদের করোনার টিকা নিতে আগ্রহী করতে প্রচারে নতুন কৌশল নেওয়া হয়েছে। কৌশলের অংশ হিসেবে অষ্টগ্রামে এখন চলছে জারিগান। ভ্যানগাড়িতে করে শিল্পীরা গাইছেন জারিগান। তাঁদের সঙ্গে গানে তাল মেলাচ্ছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কয়েকটি ভ্যানে দল বেঁধে তাঁরা জারিগান গেয়ে মানুষকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিষয়ে সতর্ক করছেন এবং করোনার টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করছেন। বুধবার থেকে তাঁরা এই কার্যক্রম শুরু করেছেন। জারিগান কর্মসূচিতে প্রথম দিন ২০ জন চিকিৎসক অংশ নেন। উপজেলার বিভিন্ন সড়কে জারিগানের দলটি ভ্যানগাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মাহাবুব ইকবাল, সাধারণ সম্পাদক আ ন ম নৌশাদ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ।

বিএমএ সভাপতি মাহাবুব ইকবাল বলেন, শুরুতে প্রায় সবার মধ্যে কমবেশি টিকাভীতি ছিল। এখন কমে আসছে। বলা যায়, সর্বসাধারণের আগ্রহ বাড়ছে। সারা দেশে মানুষের আগ্রহ বাড়লেও হাওরের চিত্র ভিন্ন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও অশিক্ষার কারণে হাওরে এখনো টিকার ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। নারীদের ক্ষেত্রে চিত্র খুবই হতাশার। ফলে হাওরবাসীর প্রাণের সংস্কৃতির কিছু একটা দিয়ে প্রচার চালানো গেলে ফল আসতে পারে। সে কারণেই এই জারিগানের উদ্যোগ।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, অষ্টগ্রামের জন্য করোনার ভ্যাকসিন বরাদ্দ আছে পাঁচ হাজার। প্রথম ডোজটি আড়াই হাজার মানুষের মধ্যে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রথম দিন টিকা নেন ৩৫ জন। দ্বিতীয় দিন নেন ২৯ জন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট টিকা গ্রহণকারী ২৮০ জন। এর মধ্যে নারী মাত্র ৩৭ জন। মোট নিবন্ধনের সংখ্যা ৭৪৪। এর মধ্যে নারী ১৫ শতাংশের কম।

টিকায় নারীদের পিছিয়ে পড়ার বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘জারিগান নিয়ে সড়কে নামলাম। তা–ও যদি সংখ্যায় ভারসাম্য আসে। এতেও ফল না এলে নতুন ও ভিন্ন কিছু ভাবা হবে।’