করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে শেরপুরে বিশেষ বিধিনিষেধ

করোনাভাইরাস
ছবি: রয়টার্স

শেরপুর পৌর এলাকায় জেলা প্রশাসন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। করোনা ভাইরাসের সাম্প্রতিক সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় জনসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ৯ দফা বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে জেলা প্রশাসন। আজ শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে এই বিধিনিষেধ কার্যকর হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনার কলি মাহবুব স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বিশেষ বিধিনিষেধের ব্যাপারে জানানো হয়। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক এ টি এম জিয়াউল ইসলাম বিশেষ বিধিনিষেধ আরোপের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।  

গণবিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর পৌর এলাকায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির বাসস্থান লকডাউনের আওতাভুক্ত থাকবে। জনসমাগম হয় এ ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও বিবাহ অনুষ্ঠান, জন্মদিন, বনভোজন এবং পর্যটন স্পটসমূহ বন্ধ থাকবে। সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে। তবে ওষুধের দোকানসমূহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২৪ ঘন্টা খোলা রাখা যাবে। জরুরি পরিষেবা  ও জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত কেউ সন্ধ্যা ৭টা হতে সকাল ৭টা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে অবস্থান করতে পারবেন না।  

গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবারের দোকানসমূহ শুধু পার্সেল, , অনলাইন অর্ডার বা হোম ডেলিভারি সেবাপ্রদান করতে পারবে। কোন অবস্থাতেই এসব স্থানে বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না।

গণবিজ্ঞপ্তিতে গণপরিবহণে চলাচলের বিষয়ে বলা হয়, বাস, মাইক্রোবাস ইত্যাদি গণপরিবহনে নির্ধারিত আসনসংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। তবে যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। অটোরিকশা, ইঞ্জিনচালিত রিকশা, অন্যান্য রিকশাসমূহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু ২ জন যাত্রী বহন করতে পারবে। সিএনজি ও অটোরিকশা কোনোক্রমেই সামনের সিটে যাত্রী বহন করতে পারবে না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ সরকার কর্তৃক জারিকৃত অন্যান্য নির্দেশনাসমুহ এ বিধিনিষেধের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে।এসব নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জুন থেকে ১১ জুন পর্যন্ত শেরপুর জেলায় ৯০ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের অধিকাংশই পৌর এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে  জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির, পৌরসভার মেয়র  গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া ও পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানিক দত্ত রয়েছেন।

জেলা সিভিল সার্জন এ কে এম আনওয়ারুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের ৫ এপ্রিল জেলায় প্রথম দুই নারীর করোনা শনাক্ত হয়। এরপর প্রায় এক বছর আড়াই মাসে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫১ ।যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন না করায় সামাজিক সংস্পর্শের কারণে সাধারণ মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছেন। তাই এর বিস্তার রোধে সবাইকে সচেতন হওয়ার ও মাস্ক ব্যবহারসহ সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। করোনা চিকিৎসায় স্বাস্থ্য বিভাগের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে।