করোনায় আক্রান্ত বগুড়ার চিকিৎসকের মৃত্যু

মাসুদুর রহমান

করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে বগুড়ার আরও একজন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম এ কে এম মাসুদুর রহমান (৬০)। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় তিনি মারা যান। বগুড়ার টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালের মুখপাত্র ও সহকারী নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রহিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) বগুড়া জেলা শাখা সূত্রে জানা গেছে, এ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বগুড়ায় ছয়জন চিকিৎসক এবং উপসর্গ নিয়ে একজন চিকিৎসকের মৃত্যু হলো।

অধ্যাপক মাসুদুর রহমান বগুড়ার টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ছিলেন। এই হাসপাতালে যোগদানের আগে তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। চিকিৎসক এ কে এম মাসুদুর রহমানের বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায়।

টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রহিম বলেন, করোনার উপসর্গ দেখা দিলে মাসুদুর রহমান শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার জন্য দেন। ৪ অক্টোবর পাওয়া প্রতিবেদনে তাঁর করোনা শনাক্ত হয়। কয়েক দিন বাসাতে আইসোলেশনে থাকার পর ১১ অক্টোবর তিনি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি ঘটলে ১২ অক্টোবর তাঁকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আইসিইউতে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় নমুনা পরীক্ষায় ১৬ ও ২০ অক্টোবর তিনি কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হন। সর্বশেষ শনিবার চতুর্থ দফায় নমুনা পরীক্ষায় তিনি কোভিড নেগেটিভ শনাক্ত হন। এক দিনের মাথায় রোববার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।

বিএমএ বগুড়া জেলা শাখা সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের সাবেক পরিচালক এবং বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক উপপরিচালক নির্মলেন্দু চৌধুরী (৬১)। ২ সেপ্টেম্বর মারা যান চিকিৎসক বি এম ফারুক (৬৭)। তিনি বগুড়া শহরের খান্দার এলাকার গোহাইল সড়কের বাসিন্দা এবং রংপুর মেডিকেল কলেজের সাবেক প্রভাষক ছিলেন।

৮ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেজওয়ানুল বারী শামীম (৪৯)। তাঁর বাড়ি বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জপাড়ায়। ৬ আগস্ট করোনায় মারা যান স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (অলটারনেট মেডিসিন) মো. আবদুল লতিফ (৫৮)। তাঁর বাড়ি শহরের মালতীনগর এলাকায়। ১৪ জুলাই করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যাপক আজফারুল হাবিব রোজের স্ত্রী চিকিৎসক শামস শায়লা বানু। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের সাবেক সহকারী অধ্যাপক। ৪ জুন ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয় বগুড়া শহরের সূত্রাপুরের বাসিন্দা ও রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের (৯২)।

জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৯৯১। করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১৯৩।