করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে বাড়িতে ঢুকতে বাধা, স্কুলভবনেই মারা গেলেন বৃদ্ধ

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

তিন মাস পর নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়িতে এসে থাকতে চেয়েছিলেন এক বৃদ্ধ। কিন্তু জ্বর ও সর্দিতে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। তাই করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি স্থানীয় লোকজন। বাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ায় জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের আশ্রয় দিয়েছিলেন একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনে। সেখানেই গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মারা যান বৃদ্ধ। মারা যাওয়ার আগে আর বাড়ি ফিরতে পারলেন না তিনি। এমন মর্মান্তিক ঘটনাই ঘটেছে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে।

মারা যাওয়া ওই বৃদ্ধের বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। তাঁর বাড়ি পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মারা যাওয়ার পর রাত ১০টায় স্বেচ্ছাসেবীরা জানাজা শেষে তাঁর লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেছেন। পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শহিদ হোসেন শুক্রবার প্রথম আলোকে এ তথ্য দিয়েছেন।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বাবুল হোসেন বলেন, ওই ব্যক্তি দুই বিয়ে করেছেন। তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জে থাকতেন। তিনি একটি রড তৈরির কারখানায় ও তাঁর স্ত্রী পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। গত মঙ্গলবার তিনি জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীসহ গ্রামে আসেন। কিন্তু গ্রামের লোকজন ও তাঁর প্রথম স্ত্রীর ঘরের দুই ছেলে তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি। পরে ওই বৃদ্ধ ও তাঁর স্ত্রীকে রাইগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রাখেন জনপ্রতিনিধিরা। তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখানেই মারা যান।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ওই বৃদ্ধের কোনো স্বজন তাঁর লাশ দেখতে আসেননি। এমনকি তাঁর প্রথম স্ত্রীর দুই ছেলেও সেখানে আসেননি। পরে পাঁচবিবি উপজেলা শহর থেকে কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী এসে জানাজা শেষে তাঁর লাশ দাফন পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন।

পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে গতকাল রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই বৃদ্ধ ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না, তা পরীক্ষার জন্য তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে এসেছেন।

এ বিষয় জয়পুরহাটের সিভিল সার্জন সেলিম মিঞা বলেন, মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে মারা যাওয়া ওই বৃদ্ধ ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর নমুনা পরীক্ষার জন্য শুক্রবার ঢাকায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে।