করোনায় ও উপসর্গে মৃত্যু ১৬, কম নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত ২৭৪

করোনাভাইরাসের প্রতীকী ছবি

বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সংক্রমিত হয়ে ও এই ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ৭৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৭৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত ৩৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

আগের ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে ১ হাজার ৭২৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আর মৃত্যু হয়েছিল করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ থাকা ১৮ জনের। তার আগের ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৯৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮৯১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল, যা এক দিনের হিসাবে বিভাগে সর্বোচ্চ শনাক্তের ঘটনা। ওই সময়ে করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ থাকা ১২ জনের মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, বরিশালে করোনার প্রথম ঢেউ শুরু হয় গত বছরের ৯ এপ্রিল। ওই সময় বিভাগে এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা ছিল ২৪৩। গত বছরের জুন ওই ২৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এবার মে মাসে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর ৭ জুলাই এক দিনে ৬২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এরপর ১১ জুলাই ৭১০ এবং ১৩ জুলাই সংখ্যাটা ৮৭৯–এ পৌঁছায়। ১৯ জুলাই সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে করোনা শনাক্ত হয় ৮৯১ জনের। জুলাই মাসের শুরু থেকে বিভাগে শনাক্তের সংখ্যা ৫০০-এর ওপরে থাকছে। ব্যতিক্রম কেবল আজ বুধবার। পরীক্ষা কম হওয়ায় ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের সংখ্যা কমে ২৭৪–এ নেমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, বরিশাল বিভাগে জুলাইয়ের প্রথম থেকেই সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি চলছে। ঈদের আগের দিন হওয়ায় নমুনা সংগ্রহ কম হয়েছে, এতে পরীক্ষাও কম হয়েছে। ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের সংখ্যা কমেছে। এটাকে ইতিবাচক বা সংক্রমণ কমে গেছে, এমনটা বলা যাবে না।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, নতুন শনাক্ত ২৭৪ জনের মধ্যে বরিশাল জেলারই ৯০ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট ১১ হাজার ৭৪৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া পটুয়াখালীতে নতুন ৪০ নিয়ে মোট ৩ হাজার ৪৩২, ভোলায় নতুন ৪৫ নিয়ে মোট ২ হাজার ৭১২, পিরোজপুরে নতুন ৫৮ নিয়ে মোট ৩ হাজার ৮২৫, বরগুনায় নতুন ৩ নিয়ে মোট ২ হাজার ৩৭৪, ঝালকাঠিতে নতুন ৩৮ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫২৮। বিভাগে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখন ২৭ হাজার ৬৬৩।

বিভাগে এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৯৯ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ও উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ১৬ জনের মধ্যে ছয়জন করোনা পজিটিভ ছিলেন। তাঁদের মধ্যে বরগুনা ও পটুয়াখালীর ২ জন করে এবং পিরোজপুর ও ঝালকাঠির ১ জন করে রয়েছেন। অন্য ১০ জন করোনার উপসর্গ নিয়ে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন।

শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ঈদ উপলক্ষে লঞ্চে-বাসে করে প্রচুর মানুষ এলাকায় ফিরেছে। তারা পরিবার ও হাটবাজারে সবার সঙ্গে অবাধে মিশছে। অনেক ক্ষেত্রেই তারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। আরও শঙ্কার বিষয় হচ্ছে, করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় সংক্রমণ খুব একটা গ্রামে ছড়ায়নি। কিন্তু এবার তা গ্রামেও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে।