করোনায় কাহিল সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী

জেলায় ২০টি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ৬ লাখ মানুষের বাস। এখন বেশির ভাগের কাজ নেই, ঘরে খাবার নেই। সহায়তাও যায়নি।

ভাত রান্না করছেন সত্তরোর্ধ্ব সাঁওতাল নারী দুর্গি মুর্মু। কিন্তু তরিতরকারির টানাটানি। জানালেন, শাকপাতা দিয়ে কোনোমতে তাঁদের খাওয়া চলে। গত শুক্রবার দুপুরে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার পাললো গ্রামে।
ছবি: প্রথম আলো

দিনাজপুরের বিরল উপজেলা থেকে কাহারোল উপজেলা যাওয়ার পথে মনে হলো, পাকা সড়কের অভাব হয়তো এই জনপদে নেই।

গ্রামগুলোর বেশির ভাগ কাঁচা রাস্তা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের বদৌলতে পাকা হয়ে গেছে। সড়কের মোড়ে মোড়ে শোভা পাচ্ছে উদ্বোধনের ফলক।

কাহারোল উপজেলায় তেমনই এক পাকা সড়কের পাশে মুটনি সাঁওতালপল্লি। উপজেলা শহরে কয়েকজন বলে দিয়েছিলেন, সাঁওতাল মানুষদের পাওয়া যাবে রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের ঠিক পেছনে। জায়গাটার নাম মুটনি বাজার।

সেদিকে যাওয়ার পথে বাবুল, ভায়রো, উমরসানি ও নরেশের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। পদবি তাঁদের হেমব্রম। তাঁরা তখন রাস্তার দুই পাশে লাগানো আকাশমণিগাছে ইঁদুরের তালাশ করছিলেন। সেদিন ৭ সেপ্টেম্বর। মধ্যদুপুর।

ভায়রো হেমব্রম চল্লিশোর্ধ্ব। বাকি তিনজনের বয়স বড়জোর বিশ-পঁচিশ। বাবুল হেমব্রম জানালেন, তাঁরা কৃষিমজুর। কাজের আকাল, তাই ইঁদুর ধরতে বের হয়েছেন। পেলে মাংস জুটবে।

মুটনি সাঁওতালপল্লিতে প্রায় ৫০টি পরিবারের বাস। পাড়ায় দেখা হলো শিবু টুডুর সঙ্গে। একে একে এসে জুটলেন লক্ষ্মী মাড্ডি, চিনি হেমব্রম ও সানি কিচকু।

শিব টুডুর বয়স ৬০ ছুঁই ছুঁই। পরিবারের অভাবের কথায় মাততে তাঁর সংকোচ হয়। শুধু বললেন, ‘পাঁচ মাস থাকি বসি (আছি)। দুই মাস আগে আমন লাগানোর সময় এক হাজার টাকারও কাজ হয়নি। কেমনে চলি!’

শিব টুডুর নিজের জমি আছে পাঁচ কাঠা। আরও পাঁচ কাঠা ভাড়া নিয়েছেন। এই মোট ২৪ শতক জমিতে ধান আবাদ করেন তিনি। ঘরে ধান থাকলে ‘দম থাকে’। এতটুকুই তার সম্বল।

আড্ডায় যোগ দেওয়া প্রতিবেশী একজন বাঙালি নারী বলে উঠলেন, সাঁওতালপল্লিতে এটুকু সম্বলও আছে বড়জোর পাঁচটি পরিবারের। তাঁর কথার পিঠে চিনি হেমব্রম বলেন, ‘কত কষ্ট করি দিন নিগাইছি (কাটিয়েছি)! গরু আধি করি চলতিছিনু, তা–ও গেইল।’

চিনির বড় ছেলে ২০ বছর বয়সী অনীল টুডু কিডনি ও লিভারের অসুখে গত জুলাইয়ে মারা গেছেন। ছেলের চিকিৎসার জন্য মা আধি নিয়ে পালা গরুটি বেচে দিয়েছেন।

দিনাজপুর সদর উপজেলা থেকে বিরল হয়ে কাহারোল আসার পথে দেখেছি, দিগন্তজোড়া রোপা আমনের খেতগুলো মানুষশূন্য। কোথাও কোথাও দু–একজন কৃষক খেত নিড়ানি দিচ্ছেন, কীটনাশক ছিটাচ্ছেন।

সাঁওতালদের আদি পেশা কৃষি। তাঁরা সমতলবাসী ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষ। জাতীয় আদিবাসী পরিষদের হিসাব বলছে, সমতলের এমন মানুষদের মাত্র ৮ শতাংশের যৎসামান্য জমি আছে। বেশির ভাগই দিনমজুর।

এই মৌসুমে তাঁদের কাজ নেই। রবি সরেন তাঁর ৫০ বছরের জীবনের বড় সময়টাই কৃষিতে শ্রম দিয়েছেন। তিনি বললেন, আমন রোপণের পর কৃষিশ্রমিক কম লাগে। যতটুকু লাগে, গৃহস্থরা এলাকার বাইরে থেকে আনেন। কাজের আকালে সাঁওতালরা অভাবে পড়েন।

দিনাজপুর জেলার ১৩ উপজেলায় ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষ আছেন ছয় লাখের বেশি। সাঁওতালরা সবচেয়ে বেশি। তাঁদের সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়াবে। ওঁরাও মানুষ আছে দুই লাখের কাছাকাছি।

জাতীয় আদিবাসী পরিষদ বলছে, জেলায় আরও ১৮টি ছোট ছোট জাতির মানুষ বসবাস করে—মুণ্ডা পাহাল, মাল পাহাড়ী, মালো, মুশহর, মাহালী, মাহাতো, কড়া, গুঞ্জু, লোহার, কোল কামার, ঘাটোয়াল, রাজোয়াড়, কোচ, কলহে, কোডা, তুরি, ভুঞ্জার ও কাদল। তবে শেষ দুটি জনগোষ্ঠী সরকারের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার তালিকাতেও নেই।

এই মানুষদের খোঁজ রাখেন দিনাজপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক মাসুদুল হক। তিনি বললেন, করোনার শুরুর দিকে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছিলেন। পরে কিছুদিন আমন ধান রোপণের কাজ করে সংকট একটু কমেছিল। এখন আবার কাজ কমেছে, সংকট বেড়েছে।

ক্ষুধার রাজ্য

মুটনি সাঁওতালপল্লিতে সানি কিচকু বলেছিলেন, তাঁদের ঘরে খাদ্যসংকট চলছে। প্রাকৃতিক খাদ্য সংগ্রহ করতে যে যাঁর মতো গ্রাম, পাথার, পথে–ঘাটে ঘুরছেন।

১১ সেপ্টেম্বর ঘোড়াঘাট উপজেলার চর বামুনিয়া বিশ্বনাথপুর ইউনিয়নের পাললো গ্রামে ঘরের বাইরে বসে ভাত রান্না করছিলেন সত্তরোর্ধ্ব দুর্গি মুর্মু। মেয়ে মিনি সরেনকে নিয়ে তাঁর সংসার। মেয়ের বয়স ৪০-এর বেশি।

মিনির মানসিক ভারসাম্যহীন। তবু মিনিই দুর্গির একমাত্র সম্বল। ধানের মৌসুমে মা-মেয়ে মাঠে মাঠে ধানের শিষ কুড়ান। তাই দিয়ে তাঁদের কোনোমতে খাওয়া চলে।

দুর্গি মুর্মু ভাত রান্না করেন শুধু দুপুরে। বললেন, ‘সকালে চা খাই। দুপুরে শাকসবজি দিয়ে দিন পার হয়। রাতে কোনো দিন খাই, কোনো দিন খাই না। চলতে খুব কষ্ট।’

এ বাড়ির সামনে রাস্তায় ধান শুকাতে দিচ্ছিলেন রামদাস মুর্মু। তিনিও দিনমজুরি করেন। কৃষিজমি নেই। আউশ মৌসুমে তাঁর স্ত্রী ধান কুড়িয়েছেন। সেই ধান শুকাচ্ছেন। এক মাসের খোরাক হবে।

ভরদুপুর অথচ পাললো গ্রাম প্রায় পুরুষশূন্য। রামদাস বললেন, বেশির ভাগ পুরুষ কুঁচিয়া ধরতে গেছেন। বাইন বা ইল প্রজাতির এ মাছের বাঁধা ক্রেতা আছে। পেলে হয়তো ১০০-১৫০ টাকা আয় হয়। তা দিয়ে অনেকের খোরাকি চলে।

সেখান থেকে ওসমানপুর যেতে পথে দেখি, বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্যে একটি আমন ধানখেতে ঘাস তুলছেন এক সাঁওতাল নারী। কাছে গিয়ে জানা গেল, তিনি মালতী সরেন। ঘাস বেছে দিনের শেষে ২০০ টাকা পাবেন।

এ কাজও মালতী পেয়েছেন ১৫-১৬ দিন পর। বললেন, চাল কিনতে গেলে তরিতরকারি কেনা হয় না। শাকপাতা সংগ্রহ করে তা দিয়ে ভাত খান।

রুশিনা সরেন। ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি সাঁওতাল। বললেন, সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে আগে থেকেই অভাব বেশি। করোনার কারণে তা আরও বেড়েছে।

বিরল উপজেলার হালজাই গ্রামে বিলুপ্তপ্রায় কড়া জাতিগোষ্ঠীর বাস। সাকল্যে ২৪টি পরিবারে ৯০ জন মানুষ। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের সরকারি প্রকল্পটি ১০ পরিবারকে একটি করে আধা পাকা ঘর তৈরি করে দিচ্ছে।

তবু কড়া মানুষদের মুখে হাসি নেই। করোনা তাদের কাহিল করেছে। ৫০ বছর বয়সী কলো কড়া (৫০) বলেন, তাঁদের লোকজন একসময় রেললাইনের কাজ করতেন। পেশাটা আর নেই। তাঁরা এখন কৃষিশ্রমিক।

৫ সেপ্টেম্বর কড়া জনগোষ্ঠীর কয়েকজন বললেন, তিনবেলা খেতে পান না। দু-একটি বাদে সব পরিবারের মাথায় ক্ষুদ্রঋণের কিস্তির বোঝা। বিজলী কড়া এক মাস আগে একটি গরু বিক্রি করে সেই টাকায় চলছেন, কিস্তিও দিচ্ছেন।

ক্ষুদ্রঋণদাতা এনজিও আল ফালাহর মাঠকর্মী মুসা হক অবশ্য বললেন, তাঁদের খাতক পরিবারগুলোর অর্ধেকের বেশি কিস্তি দিতে পারছে না।

এই পরিবারগুলোতে পাঁচ বছরের কম বয়সী বেশ কয়েকটি শিশু আছে। রিটা কড়ার দুই বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। ছেলেকে মাছ, ডিম, দুধ খাওয়াতে পারেন না। রিটার ভাষায়, ‘টাকার অভাবত পড়িয়া ভাতের নাগাল পাওয়া যাওছে না। মিঠাই ক্যান করি পাম!’

তিনবেলা খেতে পান না। দু-একটি বাদে সব পরিবারের মাথায় ক্ষুদ্রঋণের কিস্তির বোঝা। বিজলী কড়া এক মাস আগে একটি গরু বিক্রি করে সেই টাকায় চলছেন, কিস্তিও দিচ্ছেন।
কড়া জনগোষ্ঠীর কয়েকজন

কাজ হারিয়ে গ্রামে

দিনাজপুর সরকারি মহিলা কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক পড়ছেন সেলিনা হেমব্রম। শহরের একটি বিউটি পারলারে কাজ করে মেসভাড়াসহ পড়াশোনার খরচ চালাতেন। গত মার্চে করোনাবন্ধের গোড়ায় গ্রামের বাড়িতে ফিরে গেছেন।

সেলিনার বাড়ি বীরগঞ্জ উপজেলার মাহতাবপুরে। পাঁচ মাস কোনো আয় নেই। কয়েক দিন আগেও পারলারের মালিককে ফোন করেছিলেন। তিনি বলেছেন, পারলারে কাজ কম হচ্ছে, লোক দরকার নেই।

রাজীব টুডু ঢাকার কেরানীগঞ্জের একটি কাপড়ের কারখানায় কাজ করতেন। মার্চের প্রথম সপ্তাহে ফুলবাড়ী উপজেলার বেদবেদী ইউনিয়নের ফরিদাপাড়া গ্রামে ফিরে গেছেন। সেই থেকে বাড়িতে বসা। তিনিও কারখানায় ফোন করে শুনেছেন, কোম্পানি অল্প লোক দিয়ে কাজ চালাচ্ছে। তাঁকে দরকার নেই।

রাজীব কৃষিকাজ জানেন। জুলাই মাসে কয়েক দিন আমন রোপণের কাজ করেছেন। সেই পুঁজি আগস্ট পর্যন্ত ভেঙে ভেঙে খেয়েছেন। এখন পুঁজি শেষ, কাজও নেই।

জাতীয় আদিবাসী সমিতির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেনের বাড়ি পার্বতীপুর উপজেলায়। তিনি বললেন, গত ১০-১২ বছরে দিনাজপুর জেলা থেকে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ১৫-২০ হাজার নারী-পুরুষ ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে কাজ করতে গেছেন। করোনাকালে কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরে নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন কয়েক হাজার এমন মানুষ।

শিক্ষায় বিপর্যয়

দিনাজপুরে ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর কতজন ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করছে? জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা বিভাগের কাছে কোনো হিসাব নেই। তবে জেলা আদিবাসী ছাত্র পরিষদ বলছে, জেলায় প্রাথমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা অন্তত ১৫ হাজার।

কাহারোল উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের গড়মল্লিকপুর গ্রামে ৭০টি সাঁওতাল পরিবারের বাস। সেখানে শিশুশ্রেণি থেকে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী আছে ৫০ জনের কাছাকাছি। টেলিভিশন আছে বড়জোর পাঁচটি বাড়িতে।

সং টুডুর বড় ছেলে শুভ্র টুডু পূর্ব সাধীপুর সাধনা উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছেলে পড়ে ইটুয়া আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ৭ সেপ্টেম্বর সকালে ছেলেদের কেউ বাড়ি ছিল না।

সং বললেন, ‘স্কুল বন্ধ। বাড়িতে টিভি নাই। দামি মোবাইল নাই। বাচ্চারা লেখাপড়া করে না। খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকিছে।’ কয়েকটি গ্রামের অভিভাবকেরা বলেছেন, পেটে ভাত নেই। ছেলেমেয়েরা খাদ্য সংগ্রহেই বেশি ব্যস্ত থাকছে।

করোনার প্রভাব দীর্ঘ হওয়ায় হতাশায় ভুগছেন এইচএসসি থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়া শিক্ষার্থীরা। তাঁরা সেশনজট ও সম্ভাব্য বেকারত্ব নিয়ে চিন্তিত।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামিউল ফেরদৌস অবশ্য আশা করেন, করোনার পর সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা কার্যকর হবে এবং সমস্যা কেটে যাবে। তবে আদিবাসী ছাত্র পরিষদের জেলা সম্পাদক রুবেল টুডুর ভয়, অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়বে।

প্রথম আলোকে রুবেল বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা এমনিতেই টিউশনি করে কোনোমতে লেখাপড়ার খরচ জোগান। করোনার কারণে সেসব বন্ধ। তাঁরা আরও পিছিয়ে পড়বেন।

জাতীয় বাজেটে তবু পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় কিছু বরাদ্দ পায়। কিন্তু সমতলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের জন্য বিশেষ কোনো বরাদ্দ নেই। এখন তারা অস্তিত্ব–সংকটে পড়েছে।
রবীন্দ্রনাথ সরেন, সভাপতি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ

বিশেষ প্রণোদনা দাবি

কাহারোল উপজেলার মুটনি সাঁওতালপল্লিতে করোনাকালে ত্রাণ দিয়েছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ। এই পাড়ার দু–চারজন সরকারি ত্রাণও পেয়েছেন। ছিপ টুডু বলেছিলেন, ‘একবার চাল আর কুমড়া দিছে। কিন্তু বাড়িত ছয়-সাতজন মানুষ। কয়দিন চলে?’

পচা হেমব্রম বলেছিলেন, মেম্বার-চেয়ারম্যান তাঁদের ত্রাণ দিতে চান না। বিরলের কড়া সম্প্রদায়ের সদস্যরাও বলেছেন, জনপ্রতিনিধিদের কাছে ত্রাণ চাইতে গেলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

কাহারোলের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মফিজ উদ্দিন বলছেন, কথা সত্য। তবে তিনি বললেন, সাঁওতালরা বিভিন্ন সংস্থা থেকে ত্রাণ পান। সরকারি ত্রাণ এলে তাঁদের দু-একজনকে দেওয়া হয়। সবাইকে দিতে কুলায় না।

করোনাকালে ত্রাণ বিতরণের অভিজ্ঞতা আছে তুষার মুর্মুর। তিনি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন সহযোগিতা আসে বটে, কিন্তু তারা এর ১০ ভাগও পায় না।

করোনাকালীন সংকট সামাল দিতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য সরকারের কাছে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ প্রণোদনা চাইছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ।

সংগঠনের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, জাতীয় বাজেটে তবু পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় কিছু বরাদ্দ পায়। কিন্তু সমতলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের জন্য বিশেষ কোনো বরাদ্দ নেই। এখন তারা অস্তিত্ব–সংকটে পড়েছে।