করোনায় মেয়ের মৃত্যু, খবর পেয়ে মারা গেলেন মা
করোনায় আক্রান্ত হয়ে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন আকলিমা খাতুন (৬০)। উপসর্গ নিয়ে আরেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তাঁর মা আলিয়া বেগম (৭৮)। মঙ্গলবার সকালে আকলিমা মারা যান। মেয়ের দাফনের আগে খবরটি আলিয়া বেগমকে জানানো হয়। এরপর তিনিও মারা যান। পরে তাঁদের একসঙ্গে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়।
আলিয়া বেগমদের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামে। আলিয়া বেগমের স্বামীর নাম আকবর আলী মৃধা। মেয়ের নাম আকলিমা খাতুন (৬০)। আকলিমার স্বামীর নাম মোস্তাক আহমেদ।
প্রতিবেশী আল মামুন আরজু বলেন, আকলিমা খাতুন করোনায় আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অন্যদিকে করোনার উপসর্গ এবং বার্ধক্যজনিত জটিলতা নিয়ে মা আলিয়া বেগম রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ফরিদপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০টার দিকে আকলিমা মারা যান। মারা যাওয়ার পর তাঁর মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তাঁর কবর খোঁড়ার কাজ চলছিল। মেয়ের মারা যাওয়ার খবর দেওয়ার কিছু সময় পর মা আলিয়া স্ট্রোক করে মারা যান। এরপর আরও একটি কবর খোঁড়া হয়।
বাদ আসর কাজীবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মা ও মেয়ের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাঁদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আকলিমা-মোস্তাক দম্পতির কোনো সন্তান ছিল না। মোস্তাক খুলনায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরে তাঁরা রায়নগর গ্রামে বসবাস করতেন।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রমজান আলী খান প্রথম আলোকে বলেন, করোনায় আক্রান্ত মেয়ের পরিচর্যা করে মায়ের শরীরেও করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। তিনিও চিকিৎসাধীন ছিলেন। মেয়ের মারা যাওয়ার পর দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা হয়। বাদ জোহর তাঁর জানাজা নামাজের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু বেলা ১টার দিকে মা মারা যান। পরে আরও একটা কবর খোঁড়া হয়। একসঙ্গে জানাজা নামাজ শেষে পাশাপাশি কবরে তাঁদের দাফন করা হয়েছে।