কর্মবিরতির পর কাজে ফিরলেন মাধবপুর চা বাগানের শ্রমিকেরা

চা বাগান
প্রথম আলো ফাইল ছবি

দুই দিন কর্মবিরতি পালনের পর আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর চা-বাগানের শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন। চা প্ল্যান্টেশন এলাকায় অবৈধভাবে নির্মিত বসতঘর উচ্ছেদ নিয়ে এক নারী চা-শ্রমিকের সঙ্গে সহকারী ব্যবস্থাপক ও ৩ কর্মচারীর সৃষ্ট উত্তেজনায় তাঁরা কর্মবিরতিতে গিয়েছিলেন।

গত ৩০ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে মাধবপুর চা-বাগানের একটি প্ল্যান্টেশন এলাকায় উচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। এর জেরে ৩১ অক্টোবর শনিবার ও ২ নভেম্বর সোমবার ২ দিন মাধবপুর চা-বাগানের শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করেন।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলাই ভ্যালির (অঞ্চলের) কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাম পাইনকা বলেন, মাধবপুর চা-বাগানের নারী শ্রমিক জয়মন্তী নুনিয়া তাঁর জন্য একটি বসতঘর নির্মাণ করে দিতে ব্যবস্থাপকের কাছে আবেদন করেও ঘর পাননি। তাই জয়মন্তী নুনিয়া বছরখানেক আগে ৮ নম্বর সেকশনের প্ল্যান্টেশন এলাকায় একটি বসতঘর নির্মাণ করেছিলেন। গত ৩০ অক্টোবর বিকেলে তিনজন বাগান কর্মচারীকে নিয়ে একজন সহকারী ব্যবস্থাপক তাঁর ঘর উচ্ছেদ করতে যান। এ নিয়ে চা শ্রমিক জয়মন্তী নুনিয়ার সঙ্গে তাঁদের তর্ক-বিতর্ক হয়।

এর প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে কাজে যোগ না দিয়ে মাধবপুর চা-বাগানের শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করেন। এদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টায় পর্যন্ত মাধবপুর চা-বাগানে মনু-ধলাই ভ্যালির নেতৃবৃন্দ, ব্যবস্থাপক, ইউপি চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে সমঝোতা বৈঠক বসে। সে বৈঠক অনুযায়ী সোমবার আবার বৈঠক করে সমস্যার সমাধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে সোমবার বেলা ১১টায় কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান উপস্থিত হলেও ব্যবস্থাপকের অনুপস্থিতিতে কোনো বৈঠক হয়নি।

মাধবপুর চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মুরাদ চৌধুরী বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে এই চা-বাগানের ৮ নম্বর সেকশনের প্ল্যান্টেশন এলাকায় অবৈধভাবে জয়মন্তী নুনিয়া একটি বসতঘর নির্মাণ করেছিলেন। ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনায় গত ৩০ অক্টোবর ৩ জন কর্মচারীকে নিয়ে একজন সহকারী ব্যবস্থাপক অবৈধ ঘরটি উচ্ছেদে গিয়েছিলেন। তখন জয়মন্তীর সঙ্গে কোনো ধরনের অসৌজন্যমূলক ঘটনা না ঘটলেও সহকারী ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে চা-শ্রমিকেরা দুদিন কর্মবিরতি পালন করেছেন। কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে মঙ্গলবার সকাল থেকে চা-শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান বলেন, ‘আন্দোলনকারী চা-শ্রমিকদের একটি অংশ কিছুটা উচ্ছৃঙ্খল। তারা কারও কথা শোনে না। সমঝোতা বৈঠকের পরিবেশ ছিল না বলে সোমবার বৈঠক হয়নি। আমি বলেছি, আগে কাজে যোগ দিতে হবে; তারপর চা-শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হবে। এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে মাধবপুর চা-বাগানের শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন।’