কলমাকান্দা-দুর্গাপুর সড়কে ভোগান্তির শেষ নেই

মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ তো হয়ইনি, উল্টো অনিয়মের কারণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে

নেত্রকোনার কলমাকান্দা-দুর্গাপুর সড়কটি সংস্কারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ ফেলে রাখায় সড়কের স্থানে স্থানে এ দশা। গত বুধবার সড়কের নাজিরপুর বাজারের পশ্চিম অংশে
ছবি: প্রথম আলো

প্রায় আড়াই বছর আগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লি সড়ক পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় নেত্রকোনার কলমাকান্দা-দুর্গাপুর সড়কটির সংস্কারকাজ শুরু হয়। এরই মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদকাল চলে গেছে ১ বছর ১১ মাস আগে। কিন্তু সংস্কারকাজ শেষ তো হয়ইনি, উল্টো কাজে অনিয়ম আর গাফিলতির কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এখন অবশিষ্ট অংশের কাজ কবে শুরু হবে, তা অনিশ্চিত। ফলে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে।

ইতিমধ্যে কাজ শেষ হওয়া অংশের স্থানে স্থানে সৃষ্টি হচ্ছে গর্ত। বৃষ্টির পানি জমে গর্ত রূপ নিয়েছে ছোট পুকুরে। হেলেদুলে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। কখনো গাড়ি উল্টে যাচ্ছে, কখনো আটকে পড়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সামনে বর্ষা আসছে। এ পরিস্থিতিতে সড়কটি দিয়ে যাতায়াতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় লোকজন।

স্থানীয় লোকজন জানান, সড়ক সংস্কারকাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তাদের চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার জন্যই এমনটি হয়েছে।

এলজিইডি নেত্রকোনা কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের মে মাসে কলমাকান্দা-দুর্গাপুর সড়কটি সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। সড়কটির দৈর্ঘ্য ২৪ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার ও প্রস্থ ১৮ ফুট। প্রায় সাড়ে ২৪ কোটি টাকায় কাজ পায় ‘ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুটি প্যাকেজের মধ্যে কলমাকান্দা উপজেলার অংশে নাজিরপুর পর্যন্ত ১৪ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার এবং এরপর থেকে দুর্গাপুর অংশে ১০ কিলোমিটার রয়েছে। ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট সংস্কারকাজ শুরু করে ২০১৯ সালের ৬ মের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এ কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হয়।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মো. জামাল বলেন, সড়কটির কিছু অংশে সংস্কারকাজ বাকি ছিল। কাজের মেয়াদ বাড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হলে, তা বাতিল করে দেয়।

এ ব্যাপারে নেত্রকোনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিত কুণ্ডু প্রথম আলোকে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি নিয়ে প্রচুর সময় ক্ষেপণ করেছে। দ্রুত কাজ শেষ করতে প্রতিষ্ঠানটিকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ বার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা মানেনি। কিছুদিন আগে প্রতিষ্ঠানটির কাজ বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এখন নতুন করে টেন্ডার দেওয়া হবে। এমন অনিয়মে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে প্রশ্নে তিনি জানান, ডলি কনস্ট্রাকশনের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।