কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে আজকেও লঞ্চ-ফেরি বন্ধ

কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে মঙ্গলবার সকাল থেকে বন্ধ আছে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল। সকালে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে
প্রথম আলো

মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল। নাব্যতাসংকটে ফেরি চলাচল গত ১৬ অক্টোবর থেকে বন্ধ থাকলেও গতকাল সোমবার থেকে বন্ধ রয়েছে লঞ্চ চলাচল।

ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, ভয়াবহ নাব্যতাসংকটে এই নৌপথ এখন অচল হওয়া পথে। ফেরি চলাচলের অচলাবস্থার পর এবার লঞ্চ চলাচলও হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। লঞ্চ বন্ধ থাকায় স্পিডবোট ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হচ্ছে পদ্মা নদী।

বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ কাঁঠালবাড়ি ঘাট সূত্র জানায়, নৌপথের নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর চায়না নৌ-চ্যানেলে নাব্যতাসংকট থাকায় গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরেই ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কখনো ৪ থেকে ৫টি ফেরি চললেও আবার কখনো সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। গত দুই মাসে অন্তত ২৫ দিনই বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চলমান থাকায় দূরপাল্লার বাস ও বেশির ভাগ পণ্যবাহী ট্রাক বিকল্প নৌপথ হিসেবে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ব্যবহার করে আসছে।

কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ।যাত্রীরা স্পিডবোট ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পার হচ্ছেন। সকালে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে
প্রথম আলো

এদিকে ক্রমান্বয়ে চ্যানেলে পানি কমতে থাকায় গত এক সপ্তাহ ধরেই লঞ্চ চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছিল। চ্যানেল অতিক্রম করতে গিয়ে লঞ্চের তলদেশ ডুবোচরে প্রায়ই আটকে যাচ্ছিল। তা ছাড়া ডুবোচরে ধাক্কা লেগে গত এক সপ্তাহে কয়েকটি লঞ্চই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। গতকাল সোমবার সকালে চ্যানেলের নাব্যতাসংকট প্রকট আকার ধারণ করলে লঞ্চ বন্ধ রাখেন মালিক ও চালকেরা।

বিকেলের দিকে ছোট ১৫-২০টি লঞ্চ চললেও সন্ধ্যায় ডুবোচরে এক ঘণ্টারও বেশি সময় যাত্রীবাহী লঞ্চ আটকে থাকে। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে লঞ্চটি ডুবোচর থেকে মুক্ত হলেও শিমুলিয়া ঘাটে যেতে না পেরে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে ফিরে আসে। এ কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে স্পিডবোট ও লঞ্চে চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। লঞ্চ বন্ধ থাকায় স্পিডবোটে যাত্রীদের চাপ বেশি।

বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ি ফেরি ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক সামসুল আবেদীন বলেন, ‘পাঁচ দিন ধরে ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ আছে। নাব্যতাসংকট ভয়াবহ থাকায় আমরা একটিও ফেরি চলাতে পারছি না। কবে ফেরি চালাতে পারব, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।'

বিআইডব্লিউটিএর কাঁঠালবাড়ি লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে নাব্যতাসংকটের কারণে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছেন লঞ্চ মালিক ও চালকেরা। চ্যানেলে যে পরিমাণ পানি আছে তাতে করে লঞ্চ চ্যানেল অতিক্রম করতে পারছে না। ঠেকে যাচ্ছে ডুবোচরে। গতকাল সকাল থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল। দুপুরে ছোট কয়েকটি লঞ্চ চললেও মঙ্গলবার সকাল থেকে সব লঞ্চ চলাচলই বন্ধ আছে।’

কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ।যাত্রীরা স্পিডবোট ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পার হচ্ছেন। সকালে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে
প্রথম আলো

এ সম্পর্কে কাঁঠালবাড়ি ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ফেরি ও লঞ্চ চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। নদীতে বড় বড় ট্রলারগুলো যাত্রী পারাপার করছে। মাঝে মাঝে বড় ট্রলারও বালুচরে আটকে যাচ্ছে। তখন ছোট ট্রলার গিয়ে ওই যাত্রী আনলোড করে তাদের পারাপার করছে। শুধুমাত্র ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল করলেও পদ্মা সেতুর কাছাকাছি গিয়ে লম্বা বাঁশ নিয়ে পানির গভীরতা মাপতে মাপতে খুবই ধীর গতিতে সেতু এলাকা পার হচ্ছে।