কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়ায় সীমিত পরিসরে ফেরি চলাচল শুরু

কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে সীমিত পরিসরে স্বল্পসংখ্যক যানবাহন নিয়ে শুরু হয়েছে ফেরি চলাচল। শুক্রবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে
প্রথম আলো

মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে সীমিত পরিসরে স্বল্পসংখ্যক যানবাহন নিয়ে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় শিমুলিয়া ঘাট থেকে দুটি ফেরি স্বল্পসংখ্যক যানবাহন নিয়ে কাঁঠালবাড়ি ফেরি ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। চলতি মাসে চার দফায় প্রায় ২৫ দিনই বন্ধ আছে ফেরি চলাচল।

বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ও শিমুলিয়া ফেরিঘাট সূত্র জানায়, নাব্যতা-সংকটে তিন মাসের বেশি সময় ধরে এই নৌপথে ব্যাহত হচ্ছে নৌযান চলাচল। গত আগস্ট মাস থেকে রাতে বন্ধ রেখে দিনে স্বল্পসংখ্যক যানবাহন নিয়ে ফেরি চালানো হতো এই নৌপথে। নাব্যতা-সংকট তীব্র আকার ধারণ করে সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে। সেপ্টেম্বর মাসে পাঁচ দফায় ১৭ দিন ফেরি বন্ধ ছিল। চলতি মাসে চার দফায় প্রায় ২৫ দিনই ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। সর্বশেষ ১৫ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ১৫ দিন বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল। গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নৌপথের জাজিরা পয়েন্টের চায়না নৌ-চ্যানেল দিয়ে ফরিদপুর নামের একটি ছোট ফেরি পরীক্ষামূলক ছাড়া হয়। ফেরিটি কোনো বাধা ছাড়াই কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট থেকে শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছায়। এরপর শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ছোট ফেরি তিনটি ও কে-টাইপের দুটি ফেরি এই নৌ-চ্যানেল দিয়ে চলাচল করছে।

দুপুর ১২টার দিকে বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের মেরিন কর্মকর্তা আহমদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘চলাচলের উপযোগী ১৪টি ফেরি থাকলেও আমরা এখন ৫টি ফেরি চালাতে পারছি। ফেরিগুলো চায়না নৌ-চ্যানেলের জাজিরা পয়েন্ট ঘুরে চলাচল করছে। এখানে আঁকাবাঁকা পথ বেশি এবং তীব্র স্রোত। তাই ফেরিগুলো পারাপারে কিছুটা বেশি সময় লাগে।’ তিনি আরও বলেন, ‘চ্যানেলটি রাতে ফেরি চলাচলের উপযোগী নয়। তাই আপাতত আমরা রাতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখব। বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগ লৌহজং পয়েন্টের আগের চ্যানেলের খননকাজ করছে। ওই চ্যানেল ঠিক হলে আবার আগে মতো ফেরি চলানো যাবে।’

ড্রেজিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘পদ্মা সেতুর বড় বড় পিলারের কারণে পদ্মা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। নদীর বিভিন্ন অংশে চর জেগেছে। নদীর তলদেশে ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ায় নৌযানগুলো ঠিকমতো চলতে পারছে না। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ড্রেজিং করেও তেমন কাজ হচ্ছে না। এই চ্যানেল তার স্বাভাবিক অবস্থাতে আর কখনো ফিরবে না। তবুও চ্যানেল খননের কাজ চলমান আছে। শীত মৌসুমের আগে ফেরি চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

এদিকে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ায় উভয় ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে দুই শতাধিক যানবাহন। এ সম্পর্কে কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে কয়েকটি পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া যানবাহনের কোনো চাপ ছিল না। ১২টার পরে কিছু যানবাহন ঘাটে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু ফেরিতে খুবই সীমিত লোড নেওয়া হচ্ছে। তাই উভয় ঘাটেই যানবাহনের কিছুটা চাপ আছে।’