কাঁঠালবাড়ি–শিমুলিয়া নৌপথে আবারও ফেরি চলাচল বন্ধ

নাব্যতা সংকটের কারণে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল।
ফাইল ছবি

নাব্যতা-সংকটের কারণে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল আবারও বন্ধ রাখা হয়েছে। রোববার বেলা দুইটার দিকে চায়না নৌ চ্যানেল দিয়ে একটি ফেরি কুমিল্লা স্বল্পসংখ্যক যানবাহন নিয়ে ডুবোচরে আটকে যাওয়ার পর থেকে সাময়িকভাবে সব কটি ফেরি চলাচল স্থগিত রেখেছে ঘাট কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আবদুল আলিম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে চলতি মাসে চতুর্থবারের মতো পুরোপুরি বন্ধ রাখা হলো ফেরি চলাচল। এদিকে হঠাৎ ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উভয় ঘাটেই আটকা পড়েছে কয়েক শ যানবাহন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এ নৌপথে আসা যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকেরা।

রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাঁঠালবাড়ি ঘাটের সংযোগ সড়কে আটকা পড়েছে ১৫০টি ছোট গাড়ি, ৬০টি পণ্যবাহী ট্রাক ও ১০টি কাভার্ড ভ্যান । শিমুলিয়া ঘাটেও দেড় শতাধিক যানবাহন আটকা পড়েছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ ফেরি চলাচল স্থগিত রাখায় সব যানবাহনকে বিকল্প নৌপথ ব্যবহার করতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

ফেরিটি পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় চায়না নৌ চ্যানেলে আটকে যায়। এরপর ফেরিটি সামনে এগোতে না পারলে ফেরিটি আবার কাঁঠালবাড়ি ঘাটে ফিরে আসে। এরপর থেকেই ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত আছে।
আবদুল আলিম, বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক

বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া ফেরিঘাট সূত্র জানায়, দুই মাসের বেশি সময় ধরে নৌপথের মূল দুটি চ্যানেলে নাব্যতা-সংকটে ফেরি চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছিল। প্রতিবছর এ নাব্যতা–সংকট নিরসনে খনন কার্যক্রম চলমান হলেও বর্ষার মৌসুমে নদীর পাড়ভাঙন ও স্রোতে ভেসে আসা প্রচুর পলিমাটি চ্যানেল মুখের বিভিন্ন স্থানে জমা হয়ে ডুবোচর সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) খনন বিভাগ ডুবোচরে খননযন্ত্র বসিয়ে পলি অপসারণ করলেও স্রোতের পানিতে ভেসে আসা পলিমাটি আবার ডুবোচর সৃষ্টি করে। এর ফলে ফেরিগুলো ডুবোচরে আটকে দুর্ঘটনার শিকার হয়।

দুর্ঘটনা এড়াতে দুই সপ্তাহ ধরে নৌপথে ফেরি চলাচল সীমিত করা হয়। নৌপথে ১৩টি ফেরি সচল থাকলেও কে–টাইপের মাত্র ৫টি ফেরি স্বল্পসংখ্যক যানবাহন নিয়ে চলাচল করছিল। সবশেষ রোববার বেলা একটার দিকে কে-টাইপের ফেরি কুমিল্লা স্বল্পসংখ্যক যানবাহন নিয়ে কাঁঠালবাড়ি থেকে শিমুলিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। পদ্মা সেতুর ২৬ নম্বর পিলারের নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় ফেরিটি ডুবোচরে আটকে যায়। এরপর থেকে স্থগিত রাখা হয় ফেরি চলাচল।

বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আবদুল আলিম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কাঁঠালবাড়ি থেকে সীমিত যানবাহন লোড নিয়ে ফেরি কুমিল্লা শিমুলিয়া যাচ্ছিল। ফেরিটি পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় চায়না নৌ চ্যানেলে আটকে যায়। এরপর ফেরিটি সামনে এগোতে না পারলে ফেরিটি আবার কাঁঠালবাড়ি ঘাটে ফিরে আসে। এরপর থেকেই ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত আছে। কবে বা কখন থেকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে, তা এখনই ঠিক বলা যাচ্ছে না।