কাউন্সিলরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

জামালপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহরিয়ার আলমের গ্রেপ্তার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন এলাকাবাসী। আজ শুক্রবার দুপুরে জামালপুর শহরের কাচারিপাড়া এলাকায়
প্রথম আলো

জামালপুর শহরে এক কাউন্সিলরের গ্রেপ্তার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন এলাকাবাসী। ওই কাউন্সিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, চাঁদা চেয়ে না পেয়ে এক ব্যবসায়ীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা, ভাঙচুর, মারধর ও লুটপাট চালিয়েছেন তিনি।

আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে শহরের কাচারিপাড়া এলাকায় কলেজ রোডে ‘পৌরসভার সর্বস্তরের সচেতন জনগণ’-এর ব্যানারে এই দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কাচারিপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার জনগণ, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

অভিযুক্তের নাম শাহরিয়ার আলম। তিনি জামালপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তাঁর বিরুদ্ধে দলবল নিয়ে গত বুধবার বিকেলে শহরের মুসলিমাবাদ এলাকার চাল ব্যবসায়ী এ কে এম শফিকুল ইসলামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কর্মচারীদের মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তা–ই নয়, ওই দিন বিকেলে পুনরায় ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে ওই কাউন্সিলর শতাধিক সন্ত্রাসী নিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

ওই কাউন্সিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, চাঁদা চেয়ে না পেয়ে শহরের মুসলিমাবাদ এলাকার চাল ব্যবসায়ী এ কে এম শফিকুল ইসলামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা, ভাঙচুর, মারধর ও লুটপাট চালিয়েছেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন কাচারিপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি এ কে এম জহুরুল ইসলাম, আইনজীবী তৌফিকুল ইসলাম, কাচারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা সরোয়ার হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, আলতাফ হোসেন, আনিছুর রহমান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, কাউন্সিলর শাহরিয়ার আলম একজন মাদক ব্যবসায়ী ও নিজেও সেবনকারী। এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জমি দখল ও চাঁদাবাজি করে থাকেন। তাঁর অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। হঠাৎ করে গত বুধবার বিকেলে ওই কাউন্সিলরের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী দল একটি মাইক্রোবাসে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ব্যবসায়ী এ কে এম শফিকুল ইসলামের চালের দোকানে হামলা চালান। এ সময় তাঁরা কর্মচারীদের মারধর ও ভাঙচুর করেন। পরে বিকেলে আবার তাঁর বাড়িতে শতাধিক সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। কাউন্সিলর শাহরিয়ার ওই চাল ব্যবসায়ীরা কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে ব্যবসায়ী ও তাঁর ছেলেকে হত্যার হুমকিও দেন। এ ঘটনা থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখনো তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

পৌরসভার রাস্তা দখল করে বাড়ি নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে গিয়েছিলেন। এই ঘটনায় ওই ব্যবসায়ীর ছেলেই উল্টো আমাকে হুমকি দিয়েছেন। আমি কোথাও হামলা বা ভাঙচুর করিনি।
শাহরিয়ার আলম, জামালপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর

বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে কাউন্সিলর শাহরিয়ারকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। নাহলে এলাকাবাসী কঠোর কর্মসূচি দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

তবে কাউন্সিলর শাহরিয়ার আলম তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ওই ব্যবসায়ীর ছেলের সঙ্গে সরদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান আলীর ছেলের বন্ধুত্ব। শাহজাহান আলী পৌরসভার রাস্তা দখল করে বাড়ি নির্মাণ করছিলেন। সেখানে কাউন্সিলর হিসেবে তিনি কাজ বন্ধ করতে গিয়েছিলেন। এই ঘটনায় ওই ব্যবসায়ীর ছেলেই উল্টো তাঁকে হুমকি দিয়েছেন। কাউন্সিলর শাহরিয়ার কোথাও হামলা বা ভাঙচুর করেননি বলে দাবি করেন।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।