কাজ শেষ না হতেই ধসে গেছে বাঁধ

ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে পুরো বাঁধ নদীতে বিলীন হবে। এতে পুরো এলাকা লবণপানিতে তলিয়ে যাবে।

মেরামতকাজ শেষ হওয়ার পর বাঁধ ধসে পড়েছে। গত রোববার শ্যামনগর উপজেলার নৈকাটি গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

এক মাস ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) লোকেরা কাজ করছেন। কিন্তু কাজ শেষ না হতেই বাঁধ ধসে গেছে। কথাগুলো বলছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নৈকাটি গ্রামের ষাটোর্ধ্ব বয়সী আবদুল জব্বার। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ভাঙনের মুখী আমাগো বসবাস। বড় কোনো জোয়ার আসলি আগে আমরা ভেসে যাব।’

আবদুল জব্বারের পাশে দাঁড়ানো একই এলাকার জহুর আলী বলেন, আম্পানের পর দুই দফা বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। এবার মেরামতকাজ শেষ না হতেই আবার ভাঙল। এখনই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে পুরো বাঁধ নদীতে বিলীন হবে। এতে পুরো এলাকা লবণপানিতে তলিয়ে যাবে।

এমন আশঙ্কা ও দুশ্চিন্তা ভর করেছে ভাঙনকবলিত নৈকাটিসহ আশপাশের জনপদে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী কালিন্দী নদীর পাড়ে ৫ নম্বর পোল্ডারে ওই ভাঙন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে জানান স্থানীয় ব্যক্তিরা। তাঁদের অভিযোগ, পাউবো ও ঠিকাদারের লোকজন পরস্পর যোগসাজশে নিম্নমানের কাজ করায় গোটা এলাকা ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ৫ নম্বর পোল্ডারের নৈকাটি এলাকায় বাঁধের প্রায় ৩০ মিটারেরও বেশি জায়গায় বালুভর্তি বস্তা নদীতে দেবে গেছে। বস্তাগুলো সরে যাওয়ায় বাঁধের মধ্যভাগ ধরে নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই স্থানে মেরামতকাজ শেষ হয়। গত শুক্রবার আবার বাঁধ ধসে গেছে।

আরেক বাসিন্দা মোসলেম আলী অভিযোগ করেন, সংস্কারকাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা পাউবোর লোকজন প্রায় ১৫ দিন আগে প্রফুল্ল জোয়ারদারের বাড়ি থেকে রাতে দুই হাজার বালুভর্তি বস্তা সরিয়ে নেন।

কালীগঞ্জ উপবিভাগের কর্মসহায়ক নব কুমার জানান, মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নিয়ে খুলনার রবীন্দ্রনাথ বৈদ্য ওই কাজ করছেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য মুঠোফোন নম্বর চাইলে তিনি দিতে রাজি হননি।

সংশ্লিষ্ট পোল্ডারের দায়িত্বে থাকা পাউবোর সেকশন অফিসার তন্ময় হালদার জানান, দোলা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কাজের দায়িত্ব পায়। তবে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে সাব–ঠিকাদার রবীন্দ্র বৈদ্য সংস্কারকাজ করছেন। তাঁর সঙ্গে পাউবোর কেউ জড়িত নন।

তন্ময় হালদার আরও বলেন, নৈকাটি এলাকায় ভাঙনের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় দুই হাজার বস্তা বেশি চলে যাওয়ায় ঠিকাদারের লোকজন তা সরিয়ে নেন। দিনের বেলা ব্যস্ততা থাকায় রাতে সেসব বস্তা সরানো হয়।