কানের দুল নিতেই শিশুটিকে হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রেখেছিলেন

প্রতীকী ছবি

সাত বছর বয়সী একটি শিশুকে হত্যা করে লাশ গুম করার মামলায় রাজশাহীতে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলার তদন্ত ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, কানের সোনার দুল নিতেই শিশুটিকে হত্যা করেন যুবকটি। এরপর কানের দুল খুলে নিয়ে লাশটি শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। হত্যা ছাড়াও লাশ গুম ও দুল চুরির অপরাধে তাঁকে পৃথক দণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩-এর বিচারক আবদুস সালাম এ রায় দেন।

দণ্ডিত এই যুবকের নাম ফারুক হোসেন। রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ঘোরসা মোল্লাপাড়া গ্রামে তাঁর বাড়ি। তাঁর বাবার নাম আইয়ুব আলী। ২০১১ সালের ২৩ জুন এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। ওই সময় আসামির বয়স ১৯ বছর ছিল বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিহত শিশুটির নাম সুইটি আক্তার (৭)। তার বাবার নাম সমির উদ্দিন। বাড়ি ঘোরসা মোল্লাপাড়া গ্রামে আসামির এলাকাতেই। ঘটনার সময় শিশুটি প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

ঘটনার সঙ্গে ফারুক জড়িত থাকতে পারে বলে স্থানীয় লোকজন সন্দেহ করেন। তাঁরা ফারুকের বাড়ি ঘেরাও করে তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। একপর্যায়ে ফারুক স্বীকার করেন, কানের দুলের লোভে সুইটিকে হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলেছেন তিনি।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনার দিন সকালে শিশু সুইটি স্কুলে যাচ্ছিল। তখন ফারুক তাঁদের ফাঁকা বাড়িতে শিশুটিকে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে তার কানের সোনার দুল খুলে নিয়ে লাশটি সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। পরিবারের সদস্যরা সুইটিকে না পেয়ে চারদিকে খোঁজ করেন। এ ঘটনার সঙ্গে ফারুক জড়িত থাকতে পারে বলে স্থানীয় লোকজন সন্দেহ করেন। তাঁরা ফারুকের বাড়ি ঘেরাও করে তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। একপর্যায়ে ফারুক স্বীকার করেন, কানের দুলের লোভে সুইটিকে হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলেছেন তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং ফারুককে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা ফারুকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। আদালত ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালত ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।

হত্যার অপরাধে আদালত ফারুককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড দেন। সঙ্গে লাশ গুমের অপরাধে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া চুরির অপরাধে এক বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আইনজীবী শরিফুল ইসলাম আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আসামি ফারুক জেলহাজতেই ছিলেন। আজ রায় ঘোষণার দিন তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। রায় ঘোষণা শেষে তাঁকে আবার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।