কারারক্ষী বরখাস্ত, তদন্ত দলের কারাগার পরিদর্শন

কারাগার
প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুর জেলা কারাগার থেকে লিটন সিকদারের বদলে লিটন ফরাজী (২৮) নামের এক হাজতিকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় কারারক্ষী মো. ইব্রাহিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কারাগারের জেলার আমীরুল ইসলাম ও ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামানের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

এদিকে কারা কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য বরিশাল বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন) টিপু সুলতানকে প্রধান করে তিন সদস্যর একটি কমিটি গঠন করেছে। আজ মঙ্গলবার তাঁরা শরীয়তপুর জেলা কারাগার পরিদর্শন করে ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছেন।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা কারাগারের সুপার গোলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অসতর্কতার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। জামিনের কাগজ আসার পরে তা যাচাইবাছাই করে হাজতিদের মুক্তি দেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়ায় জেলার, ডেপুটি জেলার ও একজন কারারক্ষী যুক্ত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আর দুজন কর্মকর্তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তাঁদের ব্যাখ্যা পেলে তা ঊর্ধ্বতন কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। তাঁরাই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

জেলা কারাগার সূত্র জানায়, গোসাইরহাট থানার একটি চুরির মামলার আসামি লিটন ফরাজি ও লিটন সিকদার। তাঁরা দুজন রাজবাড়ী ও খুলনার দুটি মামলারও আসামি। লিটন ফরাজি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার দামুরকাঠি গ্রামের আবদুর রব ফরাজির ছেলে। আর লিটন সিকদার খুলনার খালিশপুরের আনোয়ার সিকদারের ছেলে। গত ১১ মার্চ তাঁদের শরীয়তপুর জেলা কারাগারে আনা হয়।

গত রোববার শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে গোসাইরহাট থানার ওই মামলায় তাঁদের জামিন দেওয়া হয়। আর খুলনা ও রাজবাড়ীর মামলায় লিটন সিকদার জামিনে থাকলেও লিটন ফরাজি জামিনে ছিলেন না। রোববার আদালত থেকে চুরির মামলায় জামিনের কাগজ কারাগারে পৌঁছালে কারা কর্তৃপক্ষ লিটন সিকদারকে না ছেড়ে লিটন ফরাজিকে সন্ধ্যায় মুক্তি দেয়। আর লিটন সিকদারকে আটক রাখে।

লিটন সিকদারের স্বজনেরা বিষয়টি নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তাদের নজরে আসে নামের ভুলে লিটন ফরাজি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। পরে সোমবার রাতে লিটন সিকদারকে জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
জামিনে মুক্ত হওয়া লিটন সিকদার সোমবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দুজন একই মামলার আসামি। রোববার যখন লিটন ফরাজিকে ছেড়ে দেয় তখন আমি কারা কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম, অন্য মামলায় তার জামিন নেই। আমার সব মামলায় জামিন আছে আমাকে মুক্তি দিন। কিন্তু তারা তা আমলে নেয়নি।’

সোমবার ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কারা কর্তৃপক্ষকে জানান শরীয়তপুর জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক (জেল সুপার) গোলাম হোসেন। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে কারারক্ষী মো. ইব্রাহীমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কীভাবে এ ঘটনাটি ঘটেছে তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে কারাগারের জেলার আমীরুল ইসলাম ও ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামানের কাছ থেকে। আর ওই দিন দায়িত্বে থাকা সহকারী কারারক্ষী ডি এম কালাম, কারারক্ষী মনিরুল ইসলাম ও উজ্জল মিয়ার কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে।

আরও পড়ুন