কার্যাদেশের ৬ মাস পরও সংস্কারকাজ শুরু হয়নি

রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে নগরের পার্ক মোড় থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত পিচ ও খোয়া উঠে বেহাল দশা। গত রোববার মহাসড়কের নবদিগঞ্জে।মঈনুল ইসলাম

রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক বেহাল। এ অবস্থা ঘুচছেই না। কার্যাদেশ দেওয়ার ছয় মাস পরও সড়কের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারের সংস্কারকাজ শুরু হয়নি। নগরের পার্ক মোড় এলাকা থেকে কাউনিয়া উপজেলা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কের শতাধিক স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ সড়কে চলাচলকারী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ, রংপুর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে রংপুর নগরের পার্ক মোড় থেকে নবদিগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। মোজাহার এন্টাপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২০ ফেব্রুয়ারি কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। আগামী নভেম্বরে কাজ শেষ করার কথা। তবে এখনো কাজ শুরু হয়নি।
রংপুর নগরের পার্ক মোড় থেকে নবদিগঞ্জ বাজার হয়ে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে যাওয়ার একমাত্র সড়ক। এ ছাড়া লালমনিরহাটে বুড়িমারী স্থলবন্দরের পণ্যবাহী ট্রাক এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের পার্ক মোড় থেকে কাউনিয়া উপজেলা বাজার পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কের শতাধিক স্থানে ছোট-বড় খানাখন্দ হয়েছে। দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকগুলো অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে সড়কের এপাশ-ওপাশ হয়ে চলাচল করছে। ট্রাকচালক ও স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, হেলেদুলে চলাচল করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় পণ্যবাহী ট্রাক উল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে। এ অবস্থা চলে আসছে তিন বছরের বেশি সময় ধরে।

রংপুর নগরের সাতমাথা এলাকায় ছোট-বড় অনেক গর্ত। সেখানে পাথরবোঝাই ট্রাকের চালক হোসেন আলীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালানো খুবই কষ্টকর ব্যাপার। একটু এদিক-সেদিক হলে উল্টে যাওয়ার ভয় থাকে।’
কাউনিয়ার নবদিগঞ্জ বাজার এলাকায় খানাখন্দে ভরা রাস্তায় বাস ও ট্রাক ধীরে ধীরে চলাচল করতে দেখা যায়। মহাসড়কের কলাতলি এলাকায় একটি বাস থেমে আছে। বাসটির এক যাত্রী বলেন, ‘কী যে অবস্থা হয়েছে এই রাস্তার! কয়েক বছর থেকে শুধু শুনে আসছি রাস্তাটি সংস্কার হবে। কিন্তু ভালো আর হয় না।’
কুড়িগ্রামগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের চালক বলেন, ‘দিনের বেলা দেখে দেখে চালা গেলেও রাতের বেলা খুব কষ্ট হয়। এই রাস্তায় কীভাবে যে গাড়ি চালাই, তা তো দেখতেই পাচ্ছেন?’

কার্যাদেশ দেওয়ার ছয় মাসে সড়কের মেরামতকাজ শুরু হয়নি। সাত মাস মেয়াদি এ প্রকল্পের সময় শেষ হবে আগামী নভেম্বরে। এ বিষয়ে ঠিকাদার মোজাহার হোসেন বলেন, ‘প্রথমে পাথরের সংকট ছিল। পরে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বর্তমানে অতিবর্ষণের কারণে এই কাজ শুরু করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আশা করছি, শিগগিরই এই সড়কের কাজ শুরু হবে।’
সওজের রংপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম শফিক উজ্জামান বলেন, সড়কের নিচে পাথর না থাকায় খানাখন্দ হয়েছে। অনেক স্থান দেবে গিয়ে ভেঙে গেছে। বিভিন্ন কারণে ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারেননি। ঠিকাদার শিগগিরই কাজ শুরু করবেন।