কালকিনি পৌরসভা নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন

পৌরসভা নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

মাদারীপুরে আলোচিত কালকিনি পৌরসভা নির্বাচন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি এ পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণের কথা ছিল।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়-১ শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মোহাম্মদ মোরশেদ আলমের স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে কালকিনি পৌরসভা সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর নির্বাচন কমিশন থেকে এই নির্বাচন স্থগিত রাখার আদেশ প্রদান করে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া এই নির্বাচন স্থগিত থাকবে। তবে কী কারণে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে পারেননি।
কালকিনি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এস এম হানিফ, বিএনপির মো. কামাল হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের লুৎফার রহমান। এ ছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মসিউর রহমান, বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা।
কালকিনি পৌরসভার মোট ভোটার ৩৩ হাজার ৪০০ জন। নারী ভোটার ১৬ হাজার ৭০০ ও পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৩০০ জন। চতুর্থ ধাপে কালকিনি পৌরসভার এই নির্বাচন ইভিএমের মাধ্যমে হওয়ার প্রস্তুতি ছিল।

৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মসিউর রহমান। বিকেল চারটার দিকে মসিউরের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল করেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান। তাৎক্ষণিক সেখানে কালকিনি থানার ওসি নাছিরউদ্দিন গাড়ি নিয়ে হাজির হন। পরে সেখান থেকে তাঁকে পুলিশের গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরই নিখোঁজ হন মসিউর। প্রতিবাদে বিক্ষোভ নিয়ে কালকিনি থানা ঘেরাও করেন তাঁর সমর্থকেরা। টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধরা। কালকিনি-ভুরঘাটা-মাদারীপুর আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভ মিছিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা চালান নৌকার প্রার্থী এস এম হানিফের সমর্থকেরা। পরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হন অন্তত অর্ধশত মানুষ। আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতাল ও কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
নিখোঁজের ১১ ঘণ্টা পর শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে কালকিনি পৌরসভার দক্ষিণ কৃষ্ণনগর নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন মসিউর রহমান। এর পরপরই আলোচনায় উঠে আসে কালকিনি পৌরসভা নির্বাচনের বিষয়টি।