কালকিনিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে হামলা, আহত ৯

হামলায় আহত একজনকে ধরে আছেন তাঁর স্বজনেরা। রোববার রাতে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সোহেল রানার নির্বাচনী প্রচারে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে তাঁর নয়জন সমর্থক ও নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাতে কালকিনি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মিনাজদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

বিদ্রোহী প্রার্থীর অভিযোগ, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নির্দেশে এ হামলা চালানো হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে হামলার ঘটনা পুরোটাই সাজানো নাটক বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম হানিফ।

হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন কালকিনি পৌরসভার উত্তর ঠেঙ্গামারা গ্রামের জয়নাল ফকিরের ছেলে মো. দুলাল ফকির (৩৫), একই গ্রামের মান্নান সরদারের ছেলে লালন সরদার (২২), দক্ষিণ ঠেঙ্গামারা গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে শান্তি রহমান (৩৮), একই গ্রামের আবদুর রশিদ ব্যাপারীর ছেলে স্বপন ব্যাপারী (৩৫), হাছেন হাওলাদারের ছেলে আলী হাওলাদার (৫৫), লতিফ ব্যাপারীর ছেলে আলম ব্যাপারী (৬০), পাঙ্গাসিয়া গ্রামের রকিব ফকিরের ছেলে শাওন ফকির (১৮), জোনারদন্দী গ্রামের মৃত আলী হাওলাদারের ছেলে খালেক হাওলাদার (৭০) ও উত্তর রাজদী গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে কাইউম (১৯)।

কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আতিকুর রহমান বলেন, হামলার ঘটানায় নয়জন রোগী হাসপাতালে আসেন। এঁদের মধ্যে একজন চিকিৎসা নিয়ে চলে যান। বাকি আটজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় কালকিনি পৌরসভার পূর্ব মিনাজদী গ্রামের ইউসুফ সরদারের বাড়িতে নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে উঠান বৈঠকের আয়োজন করেন বিদ্রোহী প্রার্থী সোহেল রানা। উঠান বৈঠকে তাঁর কর্মী ও সমর্থকেরা যোগ দেন। হঠাৎ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এতে বিদ্রোহী প্রার্থী সোহেল রানার নয়জন কর্মী-সমর্থক আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিদ্রোহী প্রার্থী সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার নেতা-কর্মীদের ওপর একের পর হামলার ঘটনা ঘটছে। পুলিশের চোখের সামনে ঘটনাগুলো ঘটলেও তারা কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। উল্টো আমাদের নেতা-কর্মীদের মামলায় জড়িয়ে আসামি করা হচ্ছে।’

অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম হানিফ মুঠোফোনে বলেন, ‘তাঁরা নিজেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে হামলার সাজানো নাটক তৈরি করছে। ওরা আমাদের নাম ব্যবহার করে নির্বাচনী ফায়দা লোটার ব্যর্থ চেষ্টা করছে।’

হামলার ঘটনায় থানায় কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি বলে জানান কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসতিয়াক আহম্মেদ। তিনি বলেন, কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।