কালিয়ায় আ.লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ও সাংসদের স্ত্রীসহ ৬৫ জনের নামে মামলা

নড়াইলের কালিয়া পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকদের নামে কালিয়া থানায় মামলা হয়।

আওয়ামী লীগ–মনোনীত প্রার্থী মো. ওয়াহিদুজ্জামান (হীরা) বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। এতে ৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে নড়াইল-১ (কালিয়া-সদরের একাংশ) আসনের সরকারদলীয় সাংসদ বি এম কবিরুল হকের (মুক্তি বিশ্বাস) স্ত্রী চন্দনা হক ও মেয়র পদে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ফকির মুশফিকুর রহমানকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ফকির মুশফিকুর রহমানের সমর্থক।

গত শনিবার দিবাগত রাত একটার দিকে কালিয়া শহরের বড়কালিয়ার ঘোষপাড়ায় নৌকার নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে কার্যালয়টি ঘিরে রাখার কাপড় ও নৌকার প্রতিকৃতি পুড়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে বোমাসাদৃশ্য দুটি বস্তু ও দুটি ছ্যানদা উদ্ধার করা হয়।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কালিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপদ ঘোষ গভীর রাত পর্যন্ত নৌকার ওই নির্বাচনী কার্যালয়ে বসতেন। তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে ও ভয় দেখাতে সেখানে তিন থেকে চারটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটনা হয়। এরপর ফকির মুশফিকুর রহমান ও চন্দনা হকের হুকুমে ওই কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। আগুন দেওয়ার পর তাঁরা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ফকির মুশফিকুর রহমানের ‘চামচ’ মার্কার স্লোগান দিতে দিতে চলে যান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফকির মুশফিকুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘এ ঘটনা সাজানো নাটক। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমার সমর্থকদের মাঠছাড়া করতে নিজেরা এটি ঘটিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।’

চন্দনা হক উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে তাঁকে গত সোমবার সাময়িক বহিষ্কার করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। চন্দনা হকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কনি মিয়া আজ দুপুরে বলেন, ‘এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

আগামী শনিবার কালিয়া পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ওয়াহিদুজ্জামান (হীরা)। আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান মেয়র ফকির মুশফিকুর রহমান। তিনি কালিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক। এ ছাড়া বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি এস এম ওয়াহিদুজ্জামান (মিলু)।