কাশ্মীরি এক ছাগলের দাম হাঁকা হচ্ছে লাখ টাকা

কাশ্মীরি জাতের এই ছাগলের দাম হাঁকা হয়েছে এক লাখ টাকা। মালিক রতন চক্রবর্তী এর পরিচর্যা করেন। গতকাল রোববার দুপুরে নীলফামারীর ডোমারের আঠিয়াবাড়ি গ্রামে।
ছবি: প্রথম আলো

কোরবানির পশুহাটকে সামনে রেখে নীলফামারীতে একটি ছাগলের দাম হাঁকা হয়েছে এক লাখ টাকা। প্রায় সাড়ে তিন ফুট উচ্চতার কাশ্মীরি জাতের ওই ছাগলের মালিক জেলার ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের আঠিয়াবাড়ি গ্রামের রতন চক্রবর্তী (২৭)।

গতকাল রোববার দুপুরে রতনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ঘরের বাইরে বাঁধা ছাগলটি গাছের লতাপাতা খাচ্ছে। ছাগলের মালিক রতন চক্রবর্তী জানান, প্রায় দুই বছর আগে সৈয়দপুর উপজেলা শহরের এক খামারির কাছ থেকে চার মাস বয়সী ওই কাশ্মীরি জাতের ছাগলের বাচ্চা ১২ হাজার টাকায় কেনেন। এরপর দুই বছর ধরে লালন–পালন করেন।

রতন চক্রবর্তী বলেন, তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে কাশ্মীরি জাতের ছাগলের লালন–পালন করেন। এর আগে আরও চারটি ছাগল পালন করে কোরবানির ঈদে প্রতিটি ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। বর্তমানে যে ছাগলটি আছে, তার ওজন বেশি। তাই দাম চাইছেন এক লাখ টাকা।

রতন বলেন, লকডাউনের কারণে পশুর হাট বন্ধ। এ কারণে ছাগলটি বিক্রি নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায় আছেন। বাড়িতে এসেও কোনো ব্যবসায়ী দর–দাম করেননি। তবে আশপাশের কেউ কেউ তাঁর প্রত্যাশিত দামের অর্ধেক বলেছেন।

আঠিয়াবাড়ি গ্রামের এই তরুণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ছাগল লালন-পালন করেই তাঁর আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ছোটবেলা থেকে তিনি দেশি জাতের ছাগল লালন করতেন। সেগুলো বড় হলে বিক্রি করতেন কোরবানির পশুহাটে। লাভের টাকা দিয়ে গরু কিনে তা বিক্রি করেও লাভ করা যায়। বর্তমানে তাঁর ১৮টি গরু আছে। এ ছাড়া পাঁচ বছর ধরে বিদেশি জাতের ছাগল পালন করেও বেশ লাভ পাচ্ছেন।

রতনের বাবা অমল চক্রবর্তী (৭০) বলেন, একসময় তাঁর কিছুই ছিল না। প্রায় ৫১ বছর আগে তিনি ছাগল পালন শুরু করে এখন পর্যন্ত ১০ বিঘা আবাদি জমি কিনেছেন। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। এখন সংসারে তেমন কোনো অভাব নেই। তাঁর ছেলে রতনও ছাগল পালন করে সংসারে সচ্ছলতা বাড়াচ্ছেন।

ডোমার উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, এ অঞ্চলে সচরাচর কাশ্মীরি জাতের ছাগল লালন-পালন করা হয় না। তবে অনেকে সৌখিনভাবে এ জাতের ছাগল পালন শুরু করেছেন। তাঁদের মধ্যে রতন চক্রবর্তী বেশ কয়েক বছর ধরে এ জাতের ছাগল পালন করছেন।