কিশোর অপরাধের জেরে বন্ধুর হাতে খুন হয় রাকিব: পুলিশ

বগুড়া জেলার মানচিত্র

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় মাদ্রাসাছাত্র রাকিব হাসান (১৪) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনের দাবি করেছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

পিবিআই বগুড়ার পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন আজ রোববার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন।

আকরামুল হোসেন বলেন, কিশোর অপরাধের জেরে প্রতিবেশী বন্ধুর হাতে খুন হয় কিশোর রাকিব হাসান। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হিয়াতপুর গ্রাম থেকে রাকিব হাসানের দুই বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন আহসান হাবীব ওরফে সজীব (২০) নামের এক যুবক এবং ১৫ বছরের এক কিশোর। গ্রেপ্তার দুজন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্চিতা ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

নিখোঁজের তিন দিনের মাথায় গত শুক্রবার সকালে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার চমরগাছা লাহিড়ীপাড়া এলাকার ফসলি মাঠের একটি ডোবার কচুরিপানা থেকে রাকিব হাসানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাকিব সোনাতলা ফাজিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র এবং পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হিয়াতপুর গ্রামের শামসুল ইসলামের ছেলে।

গত ৩১ মে থেকে রাকিব নিখোঁজ হওয়ার পর শুক্রবার সকালে পরিবারের পক্ষ থেকে গোবিন্দগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। লাশ উদ্ধারের পর তাঁর বড় ভাই বেলাল হোসেন বাদী হয়ে সোনাতলা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

এসপি আকরামুল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাকিব হাসান এবং এ হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুজন পাবজি ও ফ্রি ফায়ার গেমে আসক্ত ছিলেন। তাঁরা তিনজনই কিশোর অপরাধী। ঘটনার রাতে সোনাতলা উপজেলার লাহিড়ীপাড়া মাঠে তাঁরা একজন নারীকে ডেকে আনেন। এ সময় বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে রাকিব হাসানের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন আহসান হাবীব। এতে অজ্ঞান হয়ে পড়লে রাকিবকে ডাকতে থাকেন আহসান। সাড়া না দিলে তাকে গলা টিপে হত্যা করে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন আহসান। এরপর টেনেহিঁচড়ে ডোবার কচুরিপানায় লাশ ফেলে দুই বন্ধু ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

পিবিআইয়ের এই পুলিশ সুপার বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িত দুজনকে শনাক্ত করা হয়। এরপর গতকাল সকালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হিয়াতপুর গ্রাম থেকে আহসান হাবীব এবং আরেক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার তাঁদের বগুড়া আদালতে পাঠানো হলে দুজনই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।