কিশোরীকে মাদ্রাসায় ভর্তির কথা বলে দিনের পর দিন ধর্ষণ, গ্রেপ্তার শিক্ষক

প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের শ্রীপুরে ১৩ বছরের এক কিশোরীকে আটকে রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগে এক মাদ্রাসাশিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুর সিটির সালনা এলাকা থেকে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার শ্রীপুর থানায় মামলা হয়েছে।

আজ বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‍্যাব-১ গাজীপুর ক্যাম্প জানায়, গ্রেপ্তার শিক্ষকের নাম আসাদুজ্জামান (৩৮)। তিনি খুলনা জেলার কসবা উপজেলার বাসিন্দা। তিনি শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। সেই সূত্রে বসবাস করতেন শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের একটি গ্রামে। আর ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাড়ি গাজীপুর সিটির দক্ষিণ সালনা এলাকায়।

দক্ষিণ সালনা এলাকার হতদরিদ্র এক ব্যক্তির ১৩ বছর বয়সী মেয়েকে কম খরচে মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেওয়ার কথা বলে গত ২ আগস্ট ওই শিক্ষক ধলাদিয়া এলাকায় নিয়ে আসেন। ওই মাদ্রাসাশিক্ষক মেয়েটিকে মাদ্রাসায় ভর্তি না করে ধলাদিয়া এলাকার একটি বাড়িতে রেখে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আড়াই মাস ধরে ধর্ষণ করেন।

মামলার এজাহার, কিশোরীর পরিবার ও র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের দক্ষিণ সালনা এলাকার হতদরিদ্র এক ব্যক্তির ১৩ বছর বয়সী মেয়েকে কম খরচে মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেওয়ার কথা বলে গত ২ আগস্ট ওই শিক্ষক ধলাদিয়া এলাকায় নিয়ে আসেন। ওই মাদ্রাসাশিক্ষক মেয়েটিকে মাদ্রাসায় ভর্তি না করে ধলাদিয়া এলাকার একটি বাড়িতে রেখে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আড়াই মাস ধরে ধর্ষণ করেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার মেয়ের বাবা মেয়ের খোঁজখবর জানতে ওই শিক্ষকের মুঠোফোনে কল করেছিলেন। ওই শিক্ষক মেয়ের সঙ্গে সরাসরি কথা না বলিয়ে তার বাবাকে বলেছিলেন, ‘মেয়ে ভালো আছে। পড়াশোনা নিয়ে অনেক ব্যস্ত আছে।’ এভাবে প্রায় আড়াই মাস চলে যায়।

একসময় শিক্ষকের কথাবার্তায় মেয়ের বাবার মনে সন্দেহ জাগে। তাই তিনি সম্প্রতি সরেজমিন খোঁজ নিতে ওই মহিলা মাদ্রাসায় যান। গিয়ে জানতে পারেন, তাঁর মেয়ে ওই মাদ্রাসায় ভর্তি হয়নি। বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, তাঁর মেয়েকে ওই গ্রামের কোনো একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে। মেয়ের বাবা বিষয়টি র‍্যাবকে জানিয়ে মেয়েকে উদ্ধারে সহযোগিতা চান। পরে র‍্যাব-১ গাজীপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে একটি দল ওই শিক্ষককে সালনা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। মেয়েটির বাবার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ধলাদিয়া গ্রামের একটি তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে আজ শুক্রবার শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের মামলা করেছেন।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আগামীকাল শনিবার আদালতে পাঠানো হবে। নির্যাতনের শিকার শিশুকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে হাসপাতালে।