কিশোরের ঘাড়ে চড়ে বেড়ায় কথা বলা ৩ শালিক

কিশোর রোহান সিদ্দিকের সঙ্গে তিন শালিক মিঠু, ময়না আর ডনের যত আহ্লাদ!প্রথম আলো

মিঠু, ময়না আর ডন। তিনটি শালিক পাখি। গাছের ডালে নয়, বাসা বেঁধেছে মানুষের ঘরে। নির্দিষ্ট করে বললে, রোহান সিদ্দিক নামের এক কিশোরের সঙ্গে তাদের যত আহ্লাদ! সারাক্ষণ রোহানের সঙ্গী তারা। খাওয়াদাওয়া থেকে শুরু করে বেড়ানো—সব কিছুই হয় রোহানের ঘাড়ে ও মাথায় বসে।

শালিক পাখিকে পোষ মানানোর মতো কঠিন কাজ করা কিশোর রোহানের বাড়ি কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কে। রোহান শহরের কলকাকলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

কীভাবে পোষ মানালে, এমন প্রশ্নের জবাবে রোহান বলে, ‘লকডাউন সময়ে ইউটিউব দেখা হতো। আগে থেকেই পাখির প্রতি আলাদা ভালো লাগা কাজ করত। প্রায় আট মাস আগে একদিন ইউটিউবে শালিক পাখি পোষ মানানোর ভিডিও দেখলাম। সেটা দেখে বাড়ির পাশে একটি গাছ থেকে দুটি শালিক পাখির ছোট্ট বাচ্চা বাড়িতে নিয়ে আসি। খাবার খাওয়াই, গোসল করাই। ধীরে ধীরে পাখি দুটি বড় হতে থাকে। কয়েক মাস পর আরেকটি পাখি পাই। আস্তে আস্তে পাখি তিনটি পোষ মানে।’

মঙ্গলবার দুপুরে পিটিআই সড়কের পাশে দেখা হয় রোহানের সঙ্গে। তখন দুটি শালিক পাখি তাঁর ঘাড়ের ওপর বসে খুনসুটি করছিল। বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, শোবার ঘরে পড়ার টেবিলের পাশে তিনটি খাঁচা। সেখানে বসে আছে আরেকটি শালিক। রোহানকে দেখে ওই পাখিও এসে বসল ঘাড়ে।

রোহান জানাল, পরিবারের কয়েক সদস্যকে পাখিগুলো নাম ধরে ডাকতে পারে। মা ডাকতে পারে। আল্লাহ বলে ডাকতে পারে। পরিবারের সদস্যদের মতো বড় হচ্ছে পাখিগুলো।

রোহানের বোন সুমি আক্তার বলেন, রোহান পাখির প্রতি খুবই দুর্বল। তার পাখিপ্রেম দেখে খুবই ভালো লাগে। বাড়িতে কারও নাম ধরে ডাকলে পাখিরাও অনুকরণ করে ডাকে। এটা দেখে সবাই আনন্দ পায়।

রোহানের মা রিজিয়া খাতুন বলেন, পশু-পাখি রোহানের পছন্দ। রোহানের পাখিগুলো কথা বলে, খুব ভালো লাগে। ঘরের মধ্যে পাখি থাকায় কোনো সমস্যা হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের বরং ভালোই লাগে।’