কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের বিক্ষোভ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

বিদ্যুৎ, পানি সংকট নিরসনসহ সাত দফা দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের আবাসিক ছাত্রীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাঁরা ওই সড়কে অবস্থান নেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

বিক্ষোভ চলাকালে ছাত্রীরা সড়কের দুই পাশের গাড়ি আটকে বালতি, বোতল ইত্যাদি তৈজসপত্র বাজিয়ে ‘নবাববাড়ি অন্ধকার, ভিসির বাড়িতে লাইট জ্বলে’, ‘নবাববাড়ি কেন রাজপথে, জবাব চাই, জবাব চাই’, ‘প্রশাসন ধিক্কার, ধিক্কার’ স্লোগান দিতে থাকে।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—বিদ্যুৎ-পানি সমস্যা সমাধান, বাসস্থান সমস্যা সমাধান, ওয়াইফাই স্পিড গতি বাড়ানো, হলে ক্যানটিন ব্যবস্থা করা, খাবারের নিম্নমান সমাধান ও খাবারে ভর্তুকি, বর্তমানের বিদ্যুৎহীন পরিস্থিতি দ্রুত ঠিক করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেনকে সবার সামনে এসে ক্ষমা চাইতে হবে।

শিক্ষার্থীদের হলে বিদ্যুৎ থাকবে না, এটা ভাবা যায় না। এটা খুবই বাজে পরিস্থিতি। আমার বাংলোতেও বিদ্যুৎ ছিল না। আইপিএসে শুধু লাইট জ্বলে। আমি নিজেও গোসল করতে পারিনি। আর অফিশিয়াল বিভিন্ন কাজও বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
এ এফ এম আবদুল মঈন, উপাচার্য, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কনক ইসলাম নামের এক আন্দোলনকারী ছাত্রী বলেন, ‘আমাদের দাবি যতক্ষণ আদায় না হবে, আমরা মাঠ ছাড়ছি না। উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু আমাদের সমস্যার কোনো সুনির্দিষ্ট সমাধান দিতে পারেননি। তাই আন্দোলন চলছে, চলবে। একই সঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেনকে সবার সামনে মাফ চাইতে হবে। ওনাকে আমরা আমাদের সমস্যার কথা জানালে উনি সমাধানের চেষ্টা না করে উল্টো আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এর আগেও আমরা তাঁর দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছি।’

সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রীদের কাছে ক্ষমা চান। পরে ছাত্রীরা হলে ফিরে যান।

হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাদেকুজ্জামান বলেন, কয়েকটি হল, ডরমিটরি ও উপাচার্যের বাংলোতে ১৬ মার্চ রাত থেকে বিদ্যুতের সমস্যা দেখা দেয়। এতে করে পানি সংকট, ওয়াইফাই সংকটও দেখা দেয়। এখন ছাত্রীরা হলে ফিরে গেছেন।

উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হলে বিদ্যুৎ থাকবে না, এটা ভাবা যায় না। এটা খুবই বাজে পরিস্থিতি। আমার বাংলোতেও বিদ্যুৎ ছিল না। আইপিএসে শুধু লাইট জ্বলে। আমি নিজেও গোসল করতে পারিনি। আর অফিশিয়াল বিভিন্ন কাজও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আমি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলেছি। এটা দ্রুত সমাধানে কাজ করছেন তাঁরা। আর আমরা বিদ্যুতের আরেকটা লাইন তৈরির কাজ করতে পারি কি না, তা নিয়েও দেখব।’

১৬ মার্চ রাত থেকে ছাত্রীদের নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হল, ছাত্রদের বঙ্গবন্ধু হলের পুরাতন অংশ, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল, উপাচার্যের বাসভবন, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ডরমিটরিসহ প্রায় সব ভবনেই বিদ্যুৎ–সংকট দেখা দেয়। একই কারণে সৃষ্টি হয়েছে পানির সংকট। পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে ওয়াইফাই সংযোগ। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা।