কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী বাড়ি

নগরের কান্দিরপাড় এলাকায় অবস্থিত পূবালী ব্যাংক ভবন ।ছবি: প্রথম আলো

নওয়াববাড়ি

কুমিল্লা নগরের ঐতিহ্যবাহী নওয়াববাড়ি। নগরের চর্থা এলাকায় মনোরম পরিবেশে দৃষ্টিনন্দন দ্বিতলাবিশিষ্ট বাড়িটির অবস্থান। ১৮৭৮ সালে সৈয়দ বশরতউল্লাহ ওই বাড়ি নির্মাণ করেন। ১২ বিঘা জমির ৪০ শতক জায়গার মধ্যে এই বাড়ি। বাড়িটির নিচতলা ৪ হাজার ৮০০ বর্গফুট, ওপরের তলা ৪ হাজার ৮০০ বর্গফুট। ওপরে ৮টি ও নিচে ১০টি কক্ষ। এই ভবনে ৬৮টি দরজা আছে। রয়েছে ৪০টি জানালা। বাড়ির পশ্চিম দিকে কবরস্থান। বাড়িটির দক্ষিণ পাশের মাঠে ১৮৮৯ সালে জেনারেটর দিয়ে নবাব ফয়জুন্নেছার ‘নওয়াব’ উপাধির সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়। তখন ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ওই অনুষ্ঠান হয়। ১৯২২ সালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই বাড়িতে দুপুরে মধ্যাহ্নভোজ মিলিত হন।

কুমিল্লা নগরের আদালত পাড়া এলাকায় অবস্থিত ডেলনী হাউস।
ছবি: এম সাদেক

ডেলনি হাউস

১৮১৫ সালে ব্যবসা–বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ফ্রান্সের ভিলেজ অব ডেলনি থেকে কুমিল্লা অঞ্চলে আসেন পিয়ারে জোসেফ ডেলনি। ওই সময়ে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের সপ্তবর্ষব্যাপী যুদ্ধ হয়। ওই যুদ্ধে ফ্রান্স পরাজিত হয়। পেশায় নৌ কমান্ডার ডেলনি ওই সময়ে দেশত্যাগ করে এই অঞ্চলে আসেন। এরপর তিনি ভুলুয়া (নোয়াখালী) ও সন্দ্বীপ অঞ্চলের জমিদারি কেনেন। পরে তিনি কুমিল্লা নগরের আদালত সড়ক এলাকার পূর্ব পাশে ১৭ একর জায়গার ওপর একতলা বাড়ি নির্মাণ করেন। বাড়িটি ১০ হাজার বর্গফুট। উচ্চতা ১৬ ফুট। এতে ১৬টি কক্ষ, ৫২টি দরজা ও ৪৫টি জানালা আছে। ১৬০ বছরের পুরোনো সচল একটি বৈদ্যুতিক পাখার রেগুলেটর (জিইসি ব্র্যান্ডের) আছে। এখন এই বাড়ির আয়তন সাড়ে ৯ একর। বাড়ির ভেতরে ধানিজমিও আছে। আছে শাকসবজিও। বাড়ির ভেতরে দুটি পুকুর। পাকিস্তান আমলে এই বাড়ির লোকদের ব্যক্তিগত এরোপ্লেন ছিল। নাম পাইপার কাব। কুমিল্লা শহরের প্রথম মোটরগাড়ি ছিল তাঁদের। (ইস্ট বেঙ্গল টিপরা-১)। বাংলাদেশে প্রথম ১৯৩৯ সালে এই বাড়িতে রিকশা আনা হয়।