কুমিল্লায় এক ভবন উচ্ছেদে শেষ হলো দুই বছরের দুর্ভোগ

উচ্ছেদ অভিযানে সড়কের জায়গায় নির্মিত বাড়ি ভাঙার কাজ করেন জেলা প্রশাসনের নিয়োজিত শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার গুণানন্দি গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

তিনতলা একটি ভবন নির্মাণ করে দখল করা হয়েছিল গ্রামের প্রধান সড়ক। দুই বছর আগে ওই ভবন নির্মাণের পর থেকেই চলাচলের দুর্ভোগ শুরু হয় পথচারীদের। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজ মঙ্গলবার ভবনটি উচ্ছেদ করে সড়কের জায়গা দখলমুক্ত করেছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন।

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ২ নম্বর দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের গুণানন্দি গ্রামে ওই সড়ক। এর অন্তত ২০ ফুট জায়গা দখল করে তিনতলা পাকা ভবন নির্মাণ করেছিলেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের সচিব ইসমাইল হোসেন। আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভবনটি বুলডোজার ও হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়।

তবে ভবনটির মালিক ইসমাইল হোসেন বলেছেন, পৈতৃকসূত্রে পাওয়া জায়গায় তিনি বাড়ি করেছিলেন। এ জন্য উচ্ছেদের সময় তিনি বাধাও দেন। কিন্তু সরকারের লোকজন বাড়িটি ভেঙে দিয়েছে। কিছু বলার নেই।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গুণানন্দি গ্রামের শত বছরের পুরোনো একটি সড়কের ২০ ফুট জায়গা দখলে নিয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এতে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেন। স্থানীয়ভাবে সালিসও হয়। কিন্তু কোনোভাবেই বিএস, সিএস ও আরএস খতিয়ানের ওই সড়কটি উদ্ধার করা যায়নি। এরপর এলাকার এক ব্যক্তি কুমিল্লা আদালতে মামলা করেন। আদালত সরকারি সড়ক দখলমুক্তের নির্দেশ দেন।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ভবনটি উচ্ছেদ অভিযানে যান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনি রায়। এ সময় তাঁর সঙ্গে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের লোকজন ও পুলিশের সদস্যরা ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযানের শুরুতেই বাড়ির গ্যাস, বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরে বুলডোজার দিয়ে ভবন ভাঙার কাজ শুরু হয়। ভবনের কিছু অংশ হাতুড়ি দিয়েও ভাঙেন শ্রমিকেরা।

একপর্যায়ে অভিযান পরিচালনার সময় ওই বাড়ির নারী সদস্যরা উচ্ছেদকারীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। বাড়ির মালিক ইসমাইল হোসেন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বুলডোজারের সামনে এসে বাধা দিলে ভবন ভাঙার কাজ সাময়িক বন্ধ থাকে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে আবারও ভাঙার কাজ শুরু হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনি রায় বলেন, বাড়িটি সরকারি সড়ক দখল করে নির্মাণ করা হয়েছিল। মালিককে একাধিকবার নোটিশ দিলেও তিনি নিজ থেকে সরানোর উদ্যোগ নেননি। তাই প্রশাসনের উদ্যোগে সড়ক থেকে ভবনটি উচ্ছেদ করা হয়েছে।