কুমিল্লায় গর্তের পানিতে ডুবে প্রাণ গেল আপন দুই ভাইয়ের

পানিতে ডুবে মৃত্যু
প্রতীকী ছবি

বালু তোলার কাজে কয়েক মাস আগে ড্রেজার দিয়ে মাটি খুঁড়ে গর্ত করা হয়। পরে সেই গর্ত ভরে যায় পানিতে। কিন্তু গর্তের চারপাশে ছিল না কোনো ধরনের নিরাপত্তাবেষ্টনী। ওই গর্ত থেকে সোহান হোসেন (৬) ও রোহান হোসেন (৪) নামের আপন দুই ভাইয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের পেরুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত আটটায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই শিশু দুটির লাশ দাফন করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল আটটায় দুই ছেলেকে নিয়ে ধান কাটতে ফসলের মাঠে যান পেরুল গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন। রোদের তাপ বাড়ায় ছেলে দুটিকে বাড়িতে চলে যেতে বলেন তিনি। দীর্ঘক্ষণ হলেও শিশুরা বাড়িতে না ফেরায় এলাকায় প্রথমে খোঁজাখুঁজি ও পরে মাইকিং করা হয়। বিকেল ৪টার দিকে ওই গ্রামের এক ব্যক্তি ওই গর্তের পানিতে দুই ভাইকে ভেসে থাকতে দেখেন। পরে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।

দুই শিশুর বাবা সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই সন্তানকে আমি একসঙ্গে হারালাম। কবরে শুইয়ে দিলাম। এই কষ্ট কেমন করে সহ্য করছি? গর্তটি আমাদের বাড়ির পাশের। আমি এর বিচার চাই।’

লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল হাশেম বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। নিহত দুই ভাইয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। বালু উত্তোলনকারী দীন মোহাম্মদকে আগেই সতর্ক করেছি, যেন গর্তের পাশে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তিনি অবহেলা করেছেন। শিগগিরই এটা নিয়ে বসা হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে দীন মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ড্রেজার দিয়ে মাটি ও বালু তুলেছি বহু আগে। ওই গর্তে বাচ্চারা গিয়ে ডুবে গেছে। গ্রামের বাড়ির কোনো পুকুরে তো নিরাপত্তাবেষ্টনী নেই। সীমানাপ্রাচীরও নেই। শিশুদের মৃত্যুতে তিনি শোকাহত।

বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, দুই শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় দুই ভাইয়ের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছে।