কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা জিল্লুর হত্যা মামলার আসামি কাউন্সিলর সত্তার গ্রেপ্তার

আবদুস সত্তার
সংগৃহীত

কুমিল্লা নগরের চৌয়ারা এলাকার বাসিন্দা ও যুবলীগ নেতা জিল্লুর রহমান চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুস সত্তারকে (৩৪) আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

আবদুস সত্তার কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। পিবিআইয়ের পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দেবনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গ্রেপ্তারের পর কাউন্সিলর আবদুস সত্তারকে রাত আটটায় কুমিল্লা নগরের হাউজিং এস্টেট এলাকার পিবিআই কার্যালয়ে আনা হয়। তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন হত্যা মামলার সঙ্গে জড়িত বলে পিবিআইয়ের আরেক পরিদর্শক মো. মতিউর রহমান নিশ্চিত করেন। এ নিয়ে জিল্লুর রহমান চৌধুরী হত্যা মামলার দুই আসামি গ্রেপ্তার হলেন। এর আগে গত ১২ নভেম্বর মামলার ৯ নম্বর আসামি কালিকিংকরপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল কাদেরকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ নভেম্বর সকাল সাতটায় জিল্লুর রহমান চৌধুরীকে ঢাকা-চট্রগ্রাম পুরাতন মহাসড়কের পুরান চৌয়ারা ধনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অদূরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আবুল হাসানকে প্রধান ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুস সত্তারকে দ্বিতীয় আসামি করে ২৪ জন এবং অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত পিবিআইকে দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. মতিউর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পিবিআই জানতে পারে কাউন্সিলর আবদুস সত্তার রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় রিকশাযোগে যাচ্ছিলেন। এরপর তাঁকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর রাত ৯টা ৩০ মিনিটে কুমিল্লা নগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বল্লভপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনকে (৪৫) গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সামবকসী এলাকার রেজাউল করিম ও কালিকিংকরপুর গ্রামের মো. কাউছারসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। পুলিশ এজাহারভুক্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে এই দুই আসামি ছাড়াও এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ওই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আবদুস সত্তারের যোগসাজশ রয়েছে বলে দাবি করেছেন দেলোয়ারের পরিবার। তদন্তে গ্রেপ্তার হওয়া এক সন্দেহভাজন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে দেলোয়ার হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে কাউন্সিলর আবদুস সত্তারের নাম উল্লেখ করেন। এই মামলায়ও আবদুস সত্তারকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

আওয়ামী লীগের অন্তত ছয়জন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আবদুস সত্তারের কাছে পরাজিত হন রাজনৈতিক গুরু দেলোয়ার হোসেন। এরপর তাঁদের মধ্যে মতদ্বৈধতা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এরপর ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর রাতে তাঁকে হত্যা করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া না গেলে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।