৬ বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা, ১৪৪ ধারা

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ছয়টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ইউপির চেয়ারম্যান বনকুমার শিবের বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়ানোকে কেন্দ্র করে গতকাল রোববার বিকেলে ওই ঘটনা ঘটে। অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রাতে পাঁচজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজনকে কেন্দ্র করে পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের পাশেই আন্দিকোট ইউনিয়নে আজ সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও হামলার খবর পেয়ে গতকাল সন্ধ্যায় কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর ও জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওই ঘটনায় আজ সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের তিন ব্যক্তি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আড়াই শ মানুষকে বিবাদী করে বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা করেছেন।

এর আগে ফেসবুক স্ট্যাটাসে মন্তব্য করার অভিযোগে গত শনিবার রাতে কোরবানপুর গ্রামের শংকর দেবনাথ (৫৪) ও আন্দিকোট গ্রামের অনিল ভৌমিক (২১) নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে বাঙ্গরা বাজার থানার পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। গতকাল তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

এ নিয়ে এলাকায় কোনো সংঘাত ও সহিংসতা যেন না ঘটে, সে জন্য গতকাল বিকেলে কোরবানপুর জিএম উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক সম্প্রীতি সভা করে বাঙ্গরা বাজার থানার পুলিশ। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন। সভা চলাকালে খবর আসে শংকর দেবনাথের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। পরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বনকুমার শিবের বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। এ সময় ছয়টি ঘর পুড়ে যায়। তবে এতে কেউ হতাহত হননি।

ইউপির চেয়ারম্যান বনকুমার শিব বলেন, ‘আমার বাড়িঘর আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে।’ বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, মুঠোফোন ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় যথাক্রমে ৯১, ৮৫ ও ৮৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আরও মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, ‘কোরবানপুরে চেয়ারম্যানের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন তদন্ত করে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কোনো ধরনের উসকানি বরদাশত করা হবে না। জেলা পুলিশ সুপার এবং আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।’