কুলাউড়ায় যুবলীগের এক নেতাকে কোপানোয় আরেক নেতাকে অব্যাহতি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় পৌরসভা নির্বাচনে বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলাম। ছবিটি গতকাল রোববার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তোলা
প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলামকে (৪০) কুপিয়ে জখমের ঘটনায় একই সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বখসকে (৪০) সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিকাশ ভৌমিক ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রেজাউর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতকাল রোববার সকালে ময়নুল ইসলামের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে কোপানোর ঘটনা সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী। এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এমন অবস্থায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে কামরুল হাসান বখসকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

আজ সোমবার সকালে মুঠোফোনে মৌলভীবাজার জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রেজাউর রহমান প্রথম আলোকে এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত কুলাউড়া পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা না–করা নিয়ে ময়নুল ও কামরুলের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এর জের ধরে গতকাল বেলা ১১টার দিকে কুলাউড়া পৌর শহরের উছলাপাড়া এলাকায় কামরুলের নেতৃত্বে তাঁর সহযোগীরা প্রথমে ময়নুলদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে হামলা চালান।

এ সময় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁরা নগদ প্রায় ১৫ লাখ টাকা লুট করে নেন। বাধা দিলে তাঁরা ময়নুলকে ধাওয়া করেন। আত্মরক্ষার্থে তিনি পাশের একটি দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। তাঁর শরীরের আটটি স্থানে ধারালো অস্ত্রের কোপ লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটায় পরে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এ ব্যাপারে ময়নুলের বড় ভাই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে কামরুলসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে কুলাউড়া থানায় মামলা করেন। এজাহারে বলা হয়, কামরুল হাসান বখস নির্বাচনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজান মিয়ার পক্ষে ছিলেন। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে ময়নুলের বিরোধের সৃষ্টি হয়।

অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে গতকাল বিকেলে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে কামরুল হাসান বখস দাবি করেন, পৌরসভা নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন। ময়নুলসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা নির্বাচনের দুই দিন আগে থেকে দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী বর্তমান মেয়র শফি আলমের পক্ষে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকালে তিনিসহ আরও কয়েকজন উছলাপাড়া এলাকায় ময়নুলদের দোকানের সামনে যান। এ সময় তাঁদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু হয়। তাঁরাও পাল্টা ইটপাটকেল ছোড়েন। এ সময় ইটের আঘাতে মইনুলের মাথা ফেটে যায়। তাঁরা ফিরে আসেন। লুটপাটের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেন।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় আজ সোমবার সকালে বলেন, ঘটনার পর আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে তাঁদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা চলছে।