কুয়াশা আর নাব্যতা–সংকটে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত

কুয়াশা আর নাব্যতা–সংকটে বিঘ্নিত ফেরি চলাচল
ফাইল ছবি

রাতের কুয়াশা আর পদ্মা নদীতে নাব্যতা–সংকটের কারণে শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌপথে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। এসব কারণে গত ১৫ দিন রাতে ছয় থেকে আট ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। প্রায়ই মাঝনদীতে যানবাহনসহ ফেরি আটকে থাকায় দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্র জানায়, শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌপথ পার হয়ে দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চট্টগ্রাম অঞ্চলে যাতায়াত করে। ওই নৌপথে পদ্মা ও মেঘনা নদী অতিক্রম করতে হয়। নৌপথটির দৈর্ঘ্য ১০ কিলোমিটার। নৌপথের শরীয়তপুর অংশে ফেরিঘাট ভেদরগঞ্জের নরসিংহপুর আর চাঁদপুর অংশে ফেরিঘাট চাঁদপুর সদরের হরিনায় অবস্থিত। দুই ঘাটে যাতায়াতের জন্য ছয়টি ফেরি চলাচল করছে। প্রতিদিন এই নৌপথে ৩৫০ থেকে ৪০০ যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হচ্ছে। যানবাহন নিয়ে নৌপথটি পাড়ি দিতে ফেরিগুলোর সময় লাগত দেড় ঘণ্টা। বর্তমানে কুয়াশা ও নাব্যতা–সংকটের কারণে রাতে ফেরি চলাচল প্রায়ই বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এ কারণে এখন ২০০ থেকে ২৫০টি যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হচ্ছে। যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় দুই ঘাটে আটকা থাকে।

কুসুমকলি ফেরির মাস্টার (চালক) অলিউর রহমান বলেন, ‘নরসিংহপুর থেকে বেরাচাক্কি পর্যন্ত দুই কিলোমিটার নদী বালুর চর পড়ে সরু হয়ে গেছে। ওই স্থান দিয়ে পানির প্রবাহ কমে গেছে। ভাটার সময় সেখানে ফেরি চালানো অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায়ই ফেরি আটকে যায়। তখন জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ওই দুই কিলোমিটার অংশ দিয়ে খনন করে দিলে আমাদের এ নৌপথে আর ফেরি চালাতে কোনো অসুবিধা হবে না।’

ওই নৌপথে চলাচলকারী ফেরি কস্তুরির মাস্টার (চালক) মনিরুজ্জামান বলেন, কুয়াশা থাকলে রাত ৯টার পর ফেরি চালাতে পারি না। ফেরিতে কোনো ফগলাইট না থাকায় কুয়াশায় পথ হারিয়ে চরে আটকে থাকতে হয়। দিনের আলোতে কুয়াশা কাটলে ফেরি স্বাভাবিকভাবে চালাতে পারে। কুয়াশার মধ্যে দুর্ঘটনারও আশঙ্কা থাকে।

নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ইজারাদার ও চরসেনসাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিতু মিয়া ব্যাপারী বলেন, শীতের মৌসুম শুরু হলেই কুয়াশায় ফেরি চালাতে সমস্যা হয়। এর সঙ্গে আছে নাব্যতা–সংকট। এ পথে চলাচলকারী যনবাহনগুলোর চালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। প্রায় সময়ই পারাপারের জন্য ঘাটে গাড়ি আটকা পড়ছে।

বেনাপোল-চট্টগ্রামগামী ট্রাকের চালক শোয়েব আলী জমাদ্দার বলেন, ‘পেঁয়াজ নিয়ে বেনাপোল থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য বুধবার নরসিংহপুর ঘাটে এসেছি। বৃহস্পতিবার দুপুরেও ফেরির সিরিয়াল পাইনি। গত ১৫ দিনে দুবার আমি এ সমস্যায় পড়েছি। ঘাটে দু-তিন দিন অপেক্ষা করার পর ফেরির সিরিয়াল পাওয়া যায়।’

শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌপথের নরসিংহপুর ফেরিঘাটের বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক আবদুল মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, কুয়াশা মাঝেমধ্যে কিছু সমস্যার সৃষ্টি করে। আর নৌপথের বিভিন্ন স্থানে নব্যতা–সংকট দূর করার জন্য খনন করা হচ্ছে। বেরাচাক্কি অংশে খননের অনুরোধ জানানো হয়েছে।