কুয়াশায় ফেরি বন্ধ, মাঝনদীতে আটকা ৫টি ফেরি

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ আছে। দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট, ৮ ডিসেম্বর
ছবি: এম রাশেদুল হক

মৌসুমের দ্বিতীয় দফার ঘন কুয়াশার কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ফেরিসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ আছে। এ কারণে দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এবং পাটুরিয়া প্রান্তে পাটুরিয়া-ঢাকা মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার করে যানবাহনের লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন আটকে থাকা শত শত যানবাহনের কয়েক হাজার যাত্রী ও চালকেরা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে নদী অববাহিকায় কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকলে নদীপথে নৌযান চলাচল ব্যাহত হয়। রাত দেড়টার দিকে অতিমাত্রায় ঘন কুয়াশা পড়তে থাকলে উপায় না পেয়ে কর্তৃপক্ষ ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ সময় পাটুরিয়া প্রান্তে পাঁচটি এবং দৌলতদিয়া প্রান্তে পাঁচটি ফেরি নোঙর করে থাকতে বাধ্য হয়। এর আগে উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে আসা পাঁচটি ফেরি মাঝনদীতে আটকা পড়ে। ফেরিতে অন্তত দেড় শতাধিক যানবাহনে কয়েক শ যাত্রী আছেন। শীত ও কুয়াশায় রাতভর নদীতে থাকায় বাড়তি দুর্ভোগের শিকার হন তাঁরা।

পাটুরিয়া ঘাটে আটকে থাকা যাত্রীবাহী পরিবহন লালনের তত্ত্বাবধায়ক নাসিম শেখ মুঠোফোনে বলেন, ঢাকা থেকে রাত ১০টার পর কুষ্টিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসেন। দিবাগত রাত একটার দিকে তাঁরা পাটুরিয়া ঘাট থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পেছনে সিরিয়ালে আটকা পড়েন। তাঁদের গাড়িটি ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কে পৌঁছানোর আগেই রাত সোয়া একটার দিকে জানতে পারেন, কুয়াশায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে জানতে পারেন, ফেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আজ বুধবার সকালে দৌলতদিয়া প্রান্তে দেখা যায়, ফেরিঘাট এলাকায় কয়েক শ ঢাকামুখী গাড়ি নদী পাড়ি দিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের প্রায় চার কিলোমিটার লম্বা লাইন ধরে অপেক্ষা করছে। শীত ও কুয়াশার মধ্যে আটকে থাকা যানবাহনের যাত্রীরা গাড়িতেই বসে আছেন। আবার অনেকে গাড়ি থেকে নেমে বাইরে চায়ের দোকানে ভিড় করছেন।

মাগুরা থেকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করেন সিয়াম প্রামাণিক ও তাঁর কয়েকজন বন্ধু। গতকাল মধ্যরাতে ফেরিঘাট থেকে প্রায় চার কিলোমিটার পেছনে তাঁরা আটকা পড়েন। তাঁদের গাড়িটি দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট এলাকায় পৌঁছানোর পর সামনের গাড়ি আর না এগোনোয় খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ফেরি বন্ধ আছে। এর পর থেকে তাঁরা বাসেই বসে আছেন। অথচ আজ সকালে তাঁদের চট্টগ্রাম পৌঁছানোর কথা ছিল।

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জিল্লুর রহমান বলেন, মৌসুমের দ্বিতীয় দফা কুয়াশায় নৌযান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হলো। কুয়াশা কেটে না যাওয়া পর্যন্ত ফেরি চলাচলের সুযোগ নেই। কুয়াশায় ফেরি বন্ধের কারণে যানবাহন পারাপার বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া প্রান্তে পাঁচ শতাধিকের মতো যানবাহন আটকে রয়েছে। এর মধ্যে দেড় শতাধিক যাত্রীবাহী বাস। একইভাবে দৌলতদিয়া প্রান্তে পাঁচ শতাধিক বিভিন্ন ধরনের গাড়ি আটকে রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।