কেঁচো সারের উদ্যোক্তা কুলসুম পেলেন শেখ হাসিনা পদক

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কেঁচো সারের উদ্যোক্তা কুলসুম আখতারকে সম্মাননা পদক তুলে দিচ্ছেন অতিথিরা
সংগৃহীত

২০০৯ সালে সপ্তম শ্রেণিতে ওঠার পর অভাবের কারণে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায় কুলসুম আখতারের। পরে শিক্ষকের পরামর্শে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার অধীনে বিষমুক্ত সবজি চাষ ও কেঁচো সার তৈরির কৌশল শিখে নেন। বাড়িতে কেঁচো সার তৈরি করে চলতে থাকে জীবনসংগ্রাম। থেমে থাকেনি পড়াশোনাও।

মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় ভার্মি কম্পোস্টে (কেঁচো সার) বিশেষ অবদান রাখায় সেই কুলসুম পেয়েছেন ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা সম্মাননা পদক-২০২০’। ৩ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি হলরুমে বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা কৃষিবিদ পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে এই পদক তুলে দেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। কুলসুম রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের সখীপুর গ্রামের রবিউল আলমের মেয়ে।

আত্মপ্রত্যয়ী এই কুলসুম আখতারকে নিয়ে ২০১৩ সালের ২ মার্চ প্রথম আলোতে ‘কুলসুমের কেঁচোর সংসার’ শিরোনামে শনিবারের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সখীপুর গ্রামে কুলসুম খাতুন ও তাঁর বাবা ইট দিয়ে তৈরি হাউস থেকে কেঁচো সার তুলছেন
ফাইল ছবি

বর্তমানে কুলসুম আখতার রংপুর কারমাইকেল কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি এসএসসিতে চতরা উচ্চবিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৪ ও এইচএসসি পরীক্ষায় চতরা বিজ্ঞান ও কারিগরি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।

পদক পাওয়ার পর কুলসুম আখতার বলেন, ‘আগে সমাজে কোনো পরিচয় ছিল না। অর্থসংকটের কারণে লেখাপড়াও করতে পারছিলাম না। প্রথম আলো আমাকে সারা দেশে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। কেঁচো সার তৈরি করে পড়াশোনা চালিয়ে এত দূর এসেছি। এ পদক পাওয়ায় আমি খুবই আনন্দিত। আমার ইচ্ছা, পীরগঞ্জের পাশাপাশি সারা দেশে কেঁচো সার ছড়িয়ে দেওয়ার।’

পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাদেকুজ্জামান সরকার মুঠোফোনে বলেন, পীরগঞ্জে কুলসুমের নাম বলতেই সবায় চেনেন। তিনি কেঁচো সারের উদ্যোক্তা। বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার উৎপাদন করছেন। তাঁকে দেখে সখীপুর গ্রামের কৃষক, শিক্ষার্থীরাও কেঁচো সার তৈরি করে বিক্রি করছেন। মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় ভার্মি কম্পোস্টে বিশেষ অবদান রাখায় কুলসুম আখতার জননেত্রী শেখ হাসিনা সম্মাননা পদক-২০২০ পেয়েছেন।