কোম্পানীগঞ্জে বাড়িতে ঢুকে সাংবাদিকসহ তিনজনকে কুপিয়ে আহত

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাংবাদিক প্রশান্ত সুভাষ চন্দ ও তাঁর ছেলে প্রসীত প্রতাপ চন্দ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে।
ছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা বসতঘরে ঢুকে এক সাংবাদিককসহ তিনজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজাদপুর গ্রামের বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আহত সাংবাদিকের নাম প্রশান্ত সুভাষ চন্দ (৪৫)। আহত বাকি দুজন হলেন সুভাষ চন্দ্রের মা বেবি চন্দ্র চন্দ (৬৫) ও ছেলে প্রসীত প্রতাপ চন্দ (১৮)। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আহত ব্যক্তিদের প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

প্রশান্ত সুভাষ চন্দ ‘দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার’ পত্রিকার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি এবং কোম্পানীগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি। তিনি ‘দৈনিক চলমান সময়’ নামে একটি অনলাইন পোর্টালের প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে সুভাষ আবদুল কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

সাংবাদিক প্রশান্ত সুভাষ চন্দ অভিযোগ করেছেন, আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী কেচ্ছা রাসেলের নেতৃত্বে ওয়াসিম, টুটুল, পিচ্চি মাসুদসহ ৩০-৩৫ জনের একদল সন্ত্রাসী অতর্কিতে তাঁদের বসতঘরে ঢুকে পড়ে। এ সময় কেচ্ছা রাসেল তাঁকে লক্ষ্য করে দুটি গুলি করে। তিনি আলমারির পাশে লুকিয়ে যাওয়ায় গুলি গায়ে লাগেনি। এরপর হামলাকারীরা অতর্কিতে তাঁকে এবং তাঁর মা-ছেলেকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে।

সুভাষ চন্দের অভিযোগ, হামলাকারীরা তাঁকে কোপানোর সময় বারবার বলছিল, ‘কাদের মির্জার বিরুদ্ধে কেন লিখিস, আর লিখবি?’ প্রশান্ত দাবি করেন, হামলাকারীরা তাঁদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করার পাশাপাশি তাঁদের বসতঘরে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

হামলার অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়ে ব্যস্ত পাওয়া যায়। পরে অন্য একটি নম্বর থেকে একাধিকবার ফোন করলে ফোন রিসিভ না করে কেটে দেওয়া হয়।

একই বিষয়ে কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত স্বপন মাহমুদ ‘প্রথম আলো’কে বলেন, সাংবাদিক প্রশান্তের সঙ্গে এলাকায় জায়গা-জমি নিয়ে ঝামেলা রয়েছে, ওই ঝামেলার জের ধরে হামলা হতে পারে।

কাদের মির্জা ঘোষিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সাংবাদিক প্রশান্ত সুভাষের বাড়িতে গিয়ে তাঁর ওপর হামলার ঘটনা তিনি কেবলই শুনেছেন। তবে এসব বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না।

এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ারকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাংবাদিক প্রশান্ত সুভাষের ওপর হামলার খবর তিনি পেয়েছেন। বিষয়টি তাঁরা দেখছেন।