ক্যানসার রোগীর অনুদানের অর্থও আত্মসাতের অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুর সদর উপজেলার মাহমুদপুর খাঁপাড়া গ্রামের উমেদ আলী খান (৬০)। ছয় বছর ধরে তিনি লড়াই করে চলেছেন মরণব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে। চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়। গত জানুয়ারিতে স্থানীয় সাংসদ ইকবাল হোসেন তাঁর হাতে অনুদানের চেক তুলে দেন।

সেই অনুদানের অর্থ ব্যাংক থেকে তুলে দিতে সহযোগিতার নামে আত্মসাতের অভিযোগে গতকাল সোমবার স্বপন খান নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। এ অনুদানের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সোনালী ব্যাংক শরীয়তপুর শাখার প্রয়াত কর্মকর্তা নুরুল হক খানের জড়িত থাকার সত্যতা পেয়েছে পুলিশ।

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা সূত্র জানায়, উমেদ আলী চেকের টাকা উত্তোলনের জন্য সোনালী ব্যাংক শরীয়তপুর শাখায় হিসাব খোলেন। তাঁকে এ কাজে সহায়তা করেন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা নুরুল হক খান ও ওই গ্রামের বাসিন্দা স্বপন খান। অনুদানের টাকা উত্তোলন করে দেওয়ার কথা বলে তাঁরা ওই ব্যক্তির কাছ থেকে আট হাজার টাকা নেন। একটি চেকে টিপসইও নেওয়া হয়। ২৬ জানুয়ারি ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে স্বপন খানের নামে চেক লিখে টাকা উত্তোলন করেন ব্যাংক কর্মকর্তা নুরুল হক খান। এরপর গত ১১ ফেব্রুয়ারি নুরুল হক খান মারা যান। কিন্তু অনুদানের টাকা আর পাননি উমেদ আলী।

এ ঘটনায় উমেদ আলী রোববার শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগ তদন্ত করছে পালং থানার পুলিশ। সোমবার দুপুরে পুলিশ স্বপন খানকে আটক করে।

উমেদ আলী খান বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। চিকিৎসা–সহায়তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ছিলেন। কিন্তু স্বপন খান ও ব্যাংক কর্মকর্তা নুরুল হক প্রতারণা করে আমার টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নিয়ে গেছে। এখন টাকার অভাবে আমি চিকিৎসা করাতে পারছি না।’

সোনালী ব্যাংক শরীয়তপুর সদর শাখার ব্যবস্থাপক কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানতেন না। পুলিশ তদন্তে এলে বিষয়টি নজরে আসে। ২৬ জানুয়ারি ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। যে চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে, তাতে স্বপন খানের নাম লেখা। আর চেকের পেছনে ব্যাংকের ওই সময়ের কর্মকর্তা নুরুল হকের স্বাক্ষর রয়েছে। তিনি গত ফেব্রুয়ারি মাসে মারা গেছেন। এ কারণে বিষয়টি নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের চেকের টাকা জালিয়াতি করে তুলে নেওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। স্বপন খানকে আটক করা হয়েছে। স্বপন ও নুরুল হককে আসামি করে মামলার প্রস্তুতি চলছে।