ক্রেতা সেজে ইলিশ খুঁজে বের করে বিক্রেতাকে জরিমানা

ভৈরব পৌর শহরের চণ্ডীবের এলাকার পংকু সওদাগর বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান
প্রথম আলো

কাঁচাবাজারের ব্যাগ হাতে বাজারে ঢুকেছিলেন তাঁরা তিনজন। এ–দোকান ও–দোকান ঘুরে কোথাও ইলিশ পাচ্ছিলেন না। কারও কাছে ইলিশ থাকলে কিনতে চান—তাঁদের এমন আগ্রহে সাড়া দেন এক বিক্রেতা। দামদর শেষে চিংড়ি মাছ দিয়ে বাক্সে লুকিয়ে রাখার স্থান থেকে ইলিশ মাছ বের করে দেন বিক্রেতা।

নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ইলিশ বিক্রির দায়ে আবদুল মোত্তালিব নামের ওই বিক্রেতাকে পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাঁর কাছে পাওয়া চার কেজি ইলিশও জব্দ করা হয়। সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের চণ্ডীবের এলাকার পংকু সওদাগর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

ক্রেতা সেজে এ অভিযানে গিয়েছিলেন ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা, জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা সুজন লতিফুর রহমান এবং নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম।

আবদুল মোত্তালিবের বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের কালীপুর এলাকায়। তিনি বলেন, তিনি ইলিশ কিনেছেন ভৈরব নৈশ মৎস্য আড়ত থেকে। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও বিক্রি করার কারণ জানতে চাইলে তাঁর উত্তর, ভুল হয়ে গেছে।

মেঘনা নদীর ভৈরব মোহনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান
প্রথম আলো

এদিকে একই দিন মেঘনা নদীর ভৈরব মোহনায় অভিযান চালিয়ে ইলিশ ধরার অভিযোগে চার জেলেকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া যায় ১৫ কেজি ইলিশ ও প্রায় এক লাখ মিটার কারেন্ট জাল। ভ্রাম্যমাণ আদালত এই দণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত জেলেরা হলেন পৌর শহর কালীপুর এলাকার ফারুক মিয়া, শিমুলকান্দি ইউনিয়নের টুকচানপুর গ্রামের মজনু মিয়া, একই ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের সিজান মিয়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ারা সরাইল উপজেলা সদরের আবুল কাসেম।

মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ভৈরবের মূল শহর ঘেঁষে মেঘনা প্রবাহিত হয়েছে। মেঘনা থেকে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন কয়েক হাজার জেলে। আবার ভৈরবে প্রসিদ্ধ নৈশ মৎস্য আড়ত রয়েছে। এই আড়তের মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মেঘনা ও হাওরের মাছ ছড়িয়ে পড়ে। সে কারণে স্থানটি স্পর্শকাতর। নিরাপদ প্রজননের স্বার্থে সরকার ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর টানা ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। তাঁদের কাছে খবর ছিল, ভৈরবে কিছু জেলে নিষেধাজ্ঞা না মেনে ইলিশ ধরছেন। বাজারেও বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় সোমবার সকালে প্রথমবারের মতো অভিযান পরিচালনা করে সত্যতা পাওয়া যায়।

জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা সুজন লতিফুর রহমান বলেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ভালোভাবে প্রচার করা হয়েছে। এরপরও অনেকে আইন মানছেন না। নানা উপায়ে ইলিশ ধরছেন এবং বিক্রি করছেন। তিনি জানান, জব্দ করা জাল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।