ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার হয়নি

বাঁধের বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুরি এলাকার ১০০ মিটার অক্টোবর মাসে ধসে পড়ে। এখন পর্যন্ত ওই অংশ সংস্কার করেনি পাউবো।

বরগুনা জেলা

বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুরি বাজারসংলগ্ন এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ধসে পড়া ১০০ মিটার অংশ দীর্ঘ তিন মাসেও সংস্কার করা হয়নি। এতে বর্ষাকালে বাঁধের ওই অংশে ভয়াবহ নদীভাঙন দেখা দিতে পারে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। বাঁধ বিলীন হলে সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের সাত গ্রাম প্লাবিত হয়ে কয়েক হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বাঁধের ওই অংশ সংস্কার করার বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বরগুনার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী কাইছার আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সদর উপজেলার ফুলঝুরি বাজারসংলগ্ন এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ধসে যাওয়া স্থানসহ ভাঙনকবলিত অন্য এলাকাগুলোর প্রকল্প তৈরি করে পাউবোর প্রধান কার্যালয় পাঠিয়েছি। প্রকল্প অনুমোদন হলে অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর বাঁধের ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ২০১৯ সালে পাউবো বিষখালী নদীর তীরের ফুলঝুরি এলাকার বাঁধের ভাঙা অংশে সংস্কারকাজ করে। গত অক্টোবর মাসে নিম্নচাপে নদীতে পানি বেড়ে বাঁধের সুরক্ষার জন্য দেওয়া জিও ব্যাগ ধসে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন এই ভাঙা অংশ জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা না হলে বাঁধের বাকি অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ফুলঝুরি বাজার থেকে দক্ষিণ দিকে পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০০ মিটারের জিও ব্যাগ ধসে বিষখালী নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ নিয়ে বাঁধের দুই-তৃতীয়াংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বিষখালী নদীতে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে মানুষ চলাচল করছে।

পাতাকাটা গ্রামের স্বপন মিয়া বাসিন্দার বলেন, ‘নদীভাঙনে আমরা বসতবাড়ি, সহায়-সম্পদ সব হারিয়েছি। এখন রাস্তার পাশের যে জমিতে মাথাগোঁজার ঠাঁই হয়েছে, তা-ও নদীভাঙনে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছি।’

ফুলঝুরি এলাকার বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘ঘরবাড়ি, ফসলি জমি সব নদীতে গ্যাছে। আমরা এহন নিঃস্ব। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু নাই। ভাঙনে স্থায়ী ব্যবস্থা না নিলে পুরো এলাকাই নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।’

ফুলঝুরি গ্রামের বাসিন্দা মো. রাসেল বলেন, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় কর্তৃপক্ষের বাঁধ নির্মাণের কথা মনে পড়ে। ঝড় থেমে গেলে তাদের আর খবর থাকে না। বর্ষা মৌসুমে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এ কারণে বাঁধের নির্মাণকাজ টেকসই হয় না। শুকনা মৌসুমে বাঁধ নির্মাণ করা হলে বাঁধ আরও টেকসই হবে। আমরা শুকনা মৌসুমে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাই।’

স্থানীয়রা বলেন, নদীভাঙন বন্ধে তাঁরা কর্তৃপক্ষের কাছে বর্ষা মৌসুমের আগে বাঁধের ভাঙা অংশ মেরামতের দাবি জানিয়েছেন ।