খননেও মিলছে না সমাধান নৌযান চলাচল ব্যাহত

কীর্তনখোলা নদীতে ভাটার সময় পন্টুনের আশপাশে পানির গভীরতা ৬ থেকে ৭ ফুটে নেমে আসছে। এতে লঞ্চের তলদেশ ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে।

বন্দরের পন্টুনসংলগ্ন এলাকাতেও দেখা দিয়েছে নাব্যতা-সংকট। হাঁটুসমান পানিতে দাঁড়িয়ে লঞ্চ পরিষ্কার করছেন এক ব্যক্তি। গতকাল বরিশাল নদীবন্দরে
প্রথম আলো

শীত মৌসুম শুরু না হতেই ঢাকার সঙ্গে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের নৌপথগুলোতে নাব্যতা-সংকট শুরু হয়েছে। নাব্যতা ফেরাতে প্রতিবছর নদী খনন হলেও বছর না ঘুরতেই তা আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। এ বছর বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনার নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় এবং অসংখ্য ডুবোচরের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

বরিশাল নৌবন্দর–সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীতে ভাটার সময় পন্টুনের আশপাশে পানির গভীরতা ৬ থেকে ৭ ফুটে নেমে আসছে। ফলে লঞ্চের তলদেশ ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে। যদিও কীর্তনখোলায় খননকাজ চলছে। তবে নৌবন্দর এলাকার নাব্যতা-সংকট কাটেনি। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন বন্দরটির এমন অবস্থা দেখা গেছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, নাব্যতা-সংকট নিরসনে ৯ অক্টোবর থেকে বরিশালসহ দক্ষিণের নৌপথগুলোতে খননকাজ শুরু হয়েছে। কীর্তনখোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীর ৩০ স্থানে প্রায় ১৪ কিলোমিটার নদী পর্যায়ক্রমে খনন করা হবে। পলি অপসারণ করা হবে ১৪ লাখ ঘনমিটার। ব্যয় হবে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। বর্তমানে ২০টি স্থানে একযোগে খননকাজ চলছে। এর মধ্যে পটুয়াখালী-ঢাকা পথের কবাই নদ, লোহালিয়া ও কীর্তনখোলা নদীও আছে।

ঢাকা-পটুয়াখালী পথের এমভি কুয়াকাটা-১ লঞ্চের সুকানি মাসুদ হাওলাদার জানান, নদীতে ২ মিটার গভীরতা থাকলেও নৌযান চলাচল করতে পারে। কিন্তু ভাটার সময় অনেক স্থানে দেড় মিটার গভীরতা পাওয়া যায়। তখন ঝুঁকি নিয়ে চালাতে হয়।

দক্ষিণাঞ্চলের পায়রা ও বিষখালী নদীতেও সংকট তীব্র হয়েছে। এই নদী দুটির সঙ্গে ঢাকা ও বরগুনা, আমতলী, পটুয়াখালীর সরাসরি নৌ যোগাযোগ থাকায় রুটটি গুরুত্বপূর্ণ। পায়রা নদীর বরগুনা অংশে চরপাড়ায় ১ কিলোমিটার, বুড়িরচরে ৫, লোচা থেকে শুরু করে ওয়াপদা স্লুইসগেট পর্যন্ত ও জাঙ্গালিয়ায় ২, ডালাচারা থেকে তিতকাটা পর্যন্ত ৮ ও কাঁকচিড়া থেকে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিশাল ডুবোচর রয়েছে। এসব পথ দিয়ে বড় নৌযানগুলো ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে ঘুরে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে।

নাব্যতা-সংকটের বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর বরিশাল অঞ্চলের খনন বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যেসব স্থানে খনন চলছে, সেখানে ১৪ ফুট ড্রাফটের জাহাজের জন্য খননের কাজ করা হবে।

এদিকে বিআইডব্লিউটিএর খনন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-বরিশাল নৌপথে সহজে নৌযান চলাচলের জন্য দুটি বিকল্প নৌপথ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। হাইড্রোগ্রাফিক সমীক্ষা করা হয়েছে। এখন প্রকল্প তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।