খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র রফিকুলের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা

খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র মো. রফিকুল আলম
ফাইল ছবি

সদ্য সমাপ্ত খাগড়াছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিদায়ী মেয়র মো. রফিকুল আলমের বিরুদ্ধে নির্বাচন ও নির্বাচন–পরবর্তী সহিংসতার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়েছে। নির্বাচনের দিন থেকে বাড়িঘরে হামলা, আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও সংখ্যালঘুদের ভয়ভীতি দেখানোসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলাগুলো হয়েছে। এর একটি গত সোমবার রাতে এবং অপর দুটি গতকাল মঙ্গলবার রাতে করা হয়।

খাগড়াছড়ি পৌরসভা নির্বাচনের ভোট দ্বিতীয় ধাপে ১৬ জানুয়ারি সমাপ্ত হয়েছে। বর্তমান মেয়র মো. রফিকুল আলম আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে (স্বতন্ত্র, মোবাইল ফোন প্রতীক) নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। এবার মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা প্রতীক) জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী। তিনি শপথ না নেওয়া পর্যন্ত রফিকুল আলমই মেয়র পদে রয়েছেন।

মেয়র রফিকুল আলমের বিরুদ্ধে একটি মামলার বাদী জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক নুর হোসেনের স্ত্রী মেহেরুন নেছা। নুর হোসেন বলেন, ভোটে নৌকার পক্ষে তিনি কাজ করায় তাঁর বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছেন রফিকুল আলমের লোকজন। এ সময় তাঁর স্ত্রী মেহেরুন নেছাকে মারধর করেছেন তাঁরা। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী মেহেরুন নেছা বাদী হয়ে সোমবার রাতে খাগড়াছড়ি থানায় মামলা করেছেন।

নির্বাচনের দিন শালবন এলাকায় আমার সমর্থক ভোটারদের আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। সে সময় আমি প্রশাসনকে এ বিষয়টি জানিয়েছিলাম। অথচ এখন উল্টো আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে।
রফিকুল আলম, মেয়র, খাগড়াছড়ি পৌরসভা

আরেকটি মামলা করেছেন ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি। তিনি বলেন, ভোটের দিন বিকেলে শালবন এলাকায় রফিকুল আলমের নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় কার্যালয়ে থাকা আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে তিনি বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে রফিকুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

শেষ মামলাটি করেছেন ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মো. রাব্বিউল আলম। তিনি বলেন, ভোট গ্রহণের দিন বিকেলে শালবন ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র দখলে ব্যর্থ হয়ে রফিকুলের নেতৃত্বে ভোট দিতে আসা আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় শালবন এলাকার সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা ও ভয়ভীতি দেখানো হয়। এ ঘটনায় তিনি মঙ্গলবার রাতে মামলা করেছেন।

তবে এ ব্যাপারে মেয়র রফিকুল আলম বলেন, ‘আমাকে হয়রানি করার জন্য আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের দিন শালবন এলাকায় আমার সমর্থক ভোটারদের আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। সে সময় আমি প্রশাসনকে এ বিষয়টি জানিয়েছিলাম। অথচ এখন উল্টো আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে।’

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রশিদ প্রথম আলোকে, মো. রফিকুল আলমের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। মামলাগুলো তদন্ত করে দেখা হবে।