খানসামায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন আপন দুই ভাই

আবদুল জব্বার শাহ ও মো. জামাল উদ্দিন (বাঁ থেকে)
ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আপন দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দুজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে মাঠে রয়েছেন। দিনরাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে দুজনেই ভোট চাইছেন। জয়ের ব্যাপারেও দুজনই বেশ আশাবাদী।

দুই চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হলেন বড় ভাই আবদুল জব্বার শাহ ও ছোট ভাই মো. জামাল উদ্দিন। এর মধ্যে আবদুল জব্বার শাহ একই ইউনিয়নে বিভিন্ন সময়ে তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এদিকে জামাল উদ্দিন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। এর আগে ২০১১ সালের নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। তাঁদের বাবা প্রয়াত আকবর আলী শাহও এ ইউপিতে দুবারের চেয়ারম্যান ছিলেন। এ ছাড়া তিনি খানসামা উপজেলা পরিষদেরও চেয়ারম্যান ছিলেন।

তাঁদের বাবাও চেয়ারম্যান হওয়ায় ‘চেয়ারম্যান পরিবার’ হিসেবে তাঁদের স্থানীয়ভাবে পরিচিতি রয়েছে। কিন্তু পারিবারিক নানা দ্বন্দ্বের কারণে এক ভাই অন্যের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন। তাই ভোটের মাঠে কেউ কাউকে ছাড় দেবেন না।

চতুর্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর এ ইউপিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন গোলাম মোস্তফা আহমেদ শাহ। এদিকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ।

স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অর্থবিত্তের দিক থেকে দুই ভাই স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। তাঁদের বাবাও চেয়ারম্যান হওয়ায় ‘চেয়ারম্যান পরিবার’ হিসেবে তাঁদের স্থানীয়ভাবে পরিচিতি রয়েছে। কিন্তু পারিবারিক নানা দ্বন্দ্বের কারণে এক ভাই অন্যের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন। তাই ভোটের মাঠে কেউ কাউকে ছাড় দেবেন না। এর আগেও ২০১১ সালে দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। ওই নির্বাচনে দুজনই পরাজিত হয়েছিলেন। ১০ বছর পর দুই ভাই আবার ভোটের মাঠে থাকায় অন্য প্রার্থীদের চেয়ে দুই ভাইকে নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে।

স্থানীয় ভোটার আবদুল কাদের বলেন, ‘দুই ভাই ভোট করোছে, হারা তামাশা দেখোছি। এর আগোত বড় ভাইর বিপরীতে ছোট ভাই ভোট করোছিলো। ছোট ভাইর জেদের কারণে সেইবার বড় ভাই হারি গেছিলো। বাড়ির ঝগড়া বিবাদ মানুষক জানায়া লাভ কী?’

চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবদুল জব্বার শাহ জানান, তাঁরা ৫ ভাই ও ১০ বোন। অন্য সব ভাইবোনেরা নির্বাচনে ছোট ভাইয়ের পক্ষ নিয়েছে। তবে তিনি জনগণের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। কারণ, স্থানীয় মানুষ ভালোবেসে তাঁকে জোর করে ভোটে দাঁড় করিয়েছেন।

ছোট ভাইয়ের প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে (জামালউদ্দিন) কিছু টাকাপয়সার মালিক হয়েছে, এখন ক্ষমতার দরকার হয়ে পড়েছে। কে ভোটে দাঁড়াইলো, কে কোন প্রতীক পেলো, সেটা নিয়ে ভাবিনা। ভোটে শতভাগ নিজের আশা দেখছি।’

জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরাও বাপের ছেলে। বড় ভাই তিনবার চেয়ারম্যান ছিলেন। বয়স হয়ে গেছে অথচ তিনি ছাড় দিতে চান না। বড় ভাইয়ের কারণে বাবার ও পরিবারের সম্মান নষ্ট হচ্ছে। এর আগেও একবার তাঁর বিপরীতে প্রার্থী হয়েছিলাম। পরিবারের সম্মান ফিরে পেতে এবারও প্রার্থীতায় নেমেছি। পরিবার ও এলাকার মানুষ আমাকে সমর্থন দিয়েছে। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আংগারপাড়া ইউপিতে ২১ হাজার ৮৩০ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে ১১ হাজার ৩৫ জন পুরুষ এবং ১০ হাজার ৭৯৫ জন নারী ভোটার।