খানাখন্দে বিকল হচ্ছে যানবাহন, চরম দুর্ভোগ

পিচ-পাথর উঠে সড়কে কাদায় ভরে গেছে। অনেক স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি মিরপুর উপজেলার রানাখড়িয়া এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সড়কের পিচ ও পাথর উঠে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। কোথাও কোথাও কাদা জমে আছে। বোঝার উপায় নেই এটা সড়ক। এসব স্থানে ভারী যানবাহন চলতে গিয়ে বিকল হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট।

সড়ক বেহাল হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। এটি উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ৩২ জেলার প্রবেশদ্বার গুরুত্বপূর্ণ কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী জাতীয় মহাসড়কের চিত্র।

কুষ্টিয়া শহরের ত্রিমোহনী এলাকা থেকে ভেড়ামারা উপজেলার বারোমাইল পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খারাপ হয়েছে তালবাড়িয়া, রানাখড়িয়া ও বহলবাড়িয়া এলাকায়। রানাখড়িয়া এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার অংশ পিচ ও পাথর উঠে সেখানে কাদা হয়ে আছে। ইট ফেলে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। এই অংশে তালবাড়িয়া বালুমহাল থেকে প্রতিদিন কয়েক শ ট্রাক ভেজা বালু নিয়ে যাতায়াত করে। এতে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বালুবাহী ভারী ট্রাক চলায় সড়কটি আরও বেহাল হয়েছে। দেখে বোঝার উপায় নেই, এটির ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করে। সেখানে প্রায়ই প্রতিদিনই ট্রাক বিকল হয়ে পড়ে। তখন যান চলাচল স্বাভাবিক হতে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা সময় লেগে যায়।

তালবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, এই সড়ক বেহাল অনেক দিন ধরেই। গত বছর এই সড়কে উঁচু-নিচু আবার কখনো ঢিবির মতো ছিল। যার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটত। আবার এ বছরে গর্তের কারণে একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

তালবাড়িয়া থেকে মোটরসাইকেলে করে কুষ্টিয়া শহরে যাতায়াত করেন চাকরিজীবী নাজমুল হক। তিনি বলেন, প্রতিদিন সকালে গিয়ে

আবার রাতে আসা লাগে। প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাস্তায় গর্তের কারণে অনেক সময় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সময় হাতে রেখে পথে বের হতে হয়।

দূরপাল্লার বাসের চালক আয়নাল হক বলেন, দশমাইল এলাকা থেকে ১৫ কিলোমিটার সড়ক পার হয়ে কুষ্টিয়া শহরে আসতে কমপক্ষে দুই ঘণ্টা সময় লাগছে। আগে যেখানে আধা ঘণ্টায় আসা যেত।

স্থানীয় সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, প্রায় তিন বছর সড়কটি সংস্কার করা হয়েছিল। তখন পণ্যবোঝাই ভারী ভারী যানবাহন চলাচলের মতো সক্ষমতার বিষয়টি মাথায় রাখা হয়নি। সংস্কারকাজের কিছুদিন পর সড়কের বিভিন্ন স্থানে উঁচু-নিচু হতে দেখা যায়। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে সড়কটি একেবারেই যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

তালবাড়িয়া রানাখড়িয়া এলাকায় বালুর ঘাট রয়েছে। প্রতিদিন বালুবোঝাই ভারী ট্রাক এখান দিয়ে মহাসড়কে উঠছে। বালু ও পানি পড়ে সড়ক দ্রুত বেহাল হয়েছে। এখন জনসাধারণকে এর খেসারত দিতে হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জনদুর্ভোগ লাঘবে সড়কে ইট-বালু ফেলে জরুরি মেরামতের কাজ করলেও এর কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম বলেন, ভেড়ামারা উপজেলার বারোমাইল এলাকা থেকে ত্রিমোহনী পর্যন্ত সড়কটি পুনর্নির্মাণের জন্য সম্প্রতি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে খুব শিগগিরই সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু হবে। সড়কটি পুনর্নির্মাণ সম্পন্ন হলে জনদুর্ভোগের নিরসন হবে।