খাবারের লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

ধর্ষণ
প্রতীকী ছবি

রাজশাহীর বাগমারায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১০ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের ফলে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘটনাটি জানাজানি হয়। গ্রামে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চালানো হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ালে পুলিশ আজ শনিবার ধর্ষণ মামলা গ্রহণ করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার একটি গ্রামে ওই অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক (৬২) গত বুধবার প্রতিবেশী এক মেয়েশিশুকে (১০) খাবারের লোভ দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নেন। এ সময় তাঁর বাড়িতে কেউ ছিলেন না। শিশুটিকে ঘরে ঢুকিয়ে নিয়ে দরজা লাগিয়ে খাবারের বদলে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে তাঁকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য বলেন। ঘটনাটি প্রকাশ করলে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেন।

শিশুর পরিবার ও এলাকার লোকজনের মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিওতে তাঁকে ঘটনার জন্য অনুতপ্ত ও ক্ষমা চাইতে দেখা গেছে।

শিশুটি বাড়িতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে ভয়ে ওই দিন ঘটনাটি পরিবারের কাউকে জানায়নি। শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরদিন বৃহস্পতিবার সে ঘটনাটি তার মাকে জানায়। শিশুর মা পরিবারের অন্য সদস্যদের জানালে তাঁরা অভিযুক্ত শিক্ষকের কাছে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জানতে চান। একপর্যায়ে শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এই অপরাধের জন্য ক্ষমা চান এবং স্থানীয়ভাবে সুরাহার জন্য অনুরোধ করেন। পরে শিশুটির পরিবারের লোকজন বিক্ষুব্ধ হলে তিনি পালিয়ে যান।

শিশুর পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটি গ্রামের অন্যদের জানালে তাঁদের সহায়তায় বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে জানানো হয়। পুলিশও শিশুর পরিবারকে এই বিষয়ে মামলা করার পরামর্শ দেয়। সে মোতাবেক আজ শনিবার দুপুরে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ও লোকজন শিশুসহ তার মা-বাবাকে বাগমারা থানায় নিয়ে আসেন। দুপুরে শিশুর মা বাদী হয়ে ওই অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষককে আসামি করে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য শিশুটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামি পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এই কাজের জন্য কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে শিশুর পরিবার ও এলাকার লোকজনের মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিওতে তাঁকে ঘটনার জন্য অনুতপ্ত ও ক্ষমা চাইতে দেখা যায়।