খাসজমি দখল করে ভরাট

ট্রাক রাখা ও কার্যালয় বানাতে ভরাট করা হচ্ছে খাসজমি। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মেড্ডা এলাকায় কোকিল টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের কাছে
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাক রাখাসহ কার্যালয় নির্মাণ করতে জেলা ট্রাক মালিক সমিতি ও মোটর ওয়ার্কশপ মেকানিক ইউনিয়নের নেতারা খাসজমি দখল করে ভরাট করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়েক দিন ধরে প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করেই জেলা শহরের মেড্ডার কোকিল টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের সামনের খাস জলাভূমি দখল নিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার পৌর ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলা শহরের মেড্ডা মৌজায় ৫৪২ এসএ দাগে (সাবেক দাগ) ও ৩ নম্বর খতিয়ানে ৩ একর ৩০ শতক জায়গা আছে, যা বর্তমানে ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত। সেখানে কোকিল টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের সামনে তিন শতকের বেশি জলাভূমি ভরাট করে জেলা ট্রাক মালিক সমিতি ও মোটর ওয়ার্কশপ মেকানিক ইউনিয়নের নেতারা দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সদর উপজেলার পৌর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মেড্ডার ওই জায়গা সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং জেলা প্রশাসনের ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত।’

প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করেই খাস জলাভূমি দখল নিতে আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানালেন, জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি শেখ মো. মহসিন জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক ও পৌরসভা ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। এই প্রভাব কাজে লাগিয়ে ট্রাক মালিক সমিতির জন্য ট্রাক রাখতে ও কার্যালয় নির্মাণ করতে তাঁরা জলাভূমি ভরাট করছেন। তিনি আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় প্রশাসনও নীরব।

এ অভিযোগের বিষয়ে জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি শেখ মো. মহসিন বলেন, ট্রাকের জন্য শহরের ভেতরে প্রবেশ করা যায় না। ২০১২ সালে মাসিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সভায় মেড্ডা কোকিল টেক্সটাইলের পূর্ব দিকের জায়গাটি ট্রাক রাখার জন্য সিদ্ধান্ত হয়। তখনই জায়গাটি বন্দোবস্তের জন্য সড়ক ও জনপথের (সওজ) কাছে আবেদন করা হয়েছিল। তবে এখনো বন্দোবস্ত পাওয়া যায়নি।

তবে ওই জায়গা বন্দোবস্ত নেওয়ার কোনো আবেদন পাননি বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী পঙ্কজ ভৌমিক। প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা বিষয়টি সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিষয়টি জানিয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ বি এম মশিউজ্জামান বলেন, শনিবার তিনি সরেজমিনে গয়ে ভরাট বন্ধ রাখতে বলেছেন। এভাবে ভরাট করে দখল করা বেআইনি। এ বিষয়ে দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।