খাসিদের পানপুঞ্জি জবরদখলে জড়িতদের বিচার দাবি

মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা ও কুলাউড়া উপজেলার খাসি জনগোষ্ঠীর পানপুঞ্জিতে জবরদখলের ঘটনায় তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি উঠেছে।

এসব এলাকা পরিদর্শন করে আসা নাগরিক প্রতিনিধি দলের এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। মঙ্গলবার রাজধানীতে বেসরকারি সংগঠন নাগরিক উদ্যোগের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

খাসি জনগোষ্ঠীর পানপুঞ্জি পরিদর্শন করে আসা নাগরিক প্রতিনিধি দলের সংবাদ সম্মেলন। ঢাকা, ১৫ জুন
ছবি: সংগৃহীত

বড়লেখা ও কুলাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার পুঞ্জিগুলোতে সম্প্রতি জবর দখলের ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকারকর্মী, পরিবেশকর্মী, শিক্ষক, ক্ষুদ্র জাতি সত্তার সংগঠক, গবেষক ও সাংবাদিকদের একটি নাগরিক প্রতিনিধিদল সেখানে ঢাকা থেকে যায়। তাঁরা গত ৭ থেকে ৮ জুন ক্ষতিগ্রস্ত পুঞ্জিগুলো পরিদর্শন করেন।

সভায় যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, দেশের ভিন্ন সত্তার পরিচয়ে বসবাস করা জাতিসত্তার ওপর এই ধরনের নিপীড়ন বারবার হতে পারে না।

সভায় মূল বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিন বলেন, মৌলভীবাজার, সিলেট ও হবিগঞ্জের খাসি ও মান্দিরা জনগোষ্ঠীর সদস্যরা ঐতিহ্যগতভাবে বন বিভাগ, চা-বাগান এবং কিছু খাসজমি এলাকায় বসবাস করেন। খাসিদের বিশেষ পানজুম স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রে এক সবুজ আবহ তৈরি করে।

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ‘পুঞ্জিবাসীদের জীবনজীবিকার সুরক্ষাই প্রথম অগ্রাধিকার’ বলে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা তুলে ধরে জোবাইদা নাসরীন আরও বলেন, ‘আমরা প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের আশ্বাস ও তৎপরতার ওপর শতভাগ আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে চাই। আমরা দেখতে চাই রাষ্ট্র রাজনৈতিকভাবে পানপুঞ্জির ভূমি সংকটের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করেছে।’

চা-বাগান কর্তৃপক্ষ, চা-বোর্ড, ভূমি মন্ত্রণালয়, বন বিভাগ, আদিবাসী সংগঠন, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজ সকলের মতামত ও পরামর্শেই এই সংকটের গ্রহণযোগ্য সমাধান সম্ভব বলেও মনে করেন জোবাইদা নাসরীন।

সভায় বলা হয়, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের ভূমি সমস্যা সমাধানে নতুন ভাবে ভূমি ও বন-নীতি করা লাগবে। সমতলের নৃগোষ্ঠীর জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, বাপা’র কেন্দ্রীয় সদস্য আমিনুর রসুল, লেখক পাভেল পার্থ প্রমুখ।